১৬ এপ্রিল ২০১৫

৩য় বছর ৩য়-৪র্থ সংখ্যা

     সবাইকে নতুন বছরের শুভেচ্ছা 



কবিরুল ইসলাম কঙ্ক

নতুন বছর নতুন দিনে


নদী জলে পেখম তুলে
নতুন বছর হাওয়া,
পাতায় পাতায় নতুন খবর
নতুন করে পাওয়া

পাখপাখালির ডানায় ডানায়
নতুন বছর উড়ান,
ফুলে ফুলে মৌমাছি দল
ফুল মুকুলের ঘ্রাণ

ছবির পাতায় রাঙা রঙে
জলছবিদের ছবি,
উঠছে বেজে নতুন সুরে
বদলে গেল সবই

ঘরের মাঝে, বাইরে ঘরে
উৎসবেরই ছোঁয়া,
নতুন দিনের আনন্দেতে
সবার পাগল হওয়া

নতুন নিয়ে ভাবনা যত
নতুন নিয়ে গান,
নতুন এবার দিক ভরিয়ে

সবার তৃষি প্রাণ । 



দীননাথ মণ্ডল

হয়তো  বা 

হয়তো বা আমিও তোমার মতো 
পথ চেয়ে বসে আছি 
বসন্তের অপেক্ষায় 
ভরা ফাগুনের মধুমাসে 
পূর্ণিমার ওই জ্যোৎস্না রাতে 
এক ঝলকের অপেক্ষায় 

হয়তো বা আমিও তোমার মতো 
কান পেতে বসে আছি 
সুরের প্রতীক্ষায় 
ছিন্নবীণার শেষ লয়ের 
হারিয়ে যাওয়া তরঙ্গের 
ভেসে আসার প্রতীক্ষায় 

হয়তো বা আমিও তোমার মতো 
হারানো ছবি আঁকছি 
মনের ধূসর গুহায় 
কোটি নক্ষত্রপুঞ্জের মতো 
আলোধারা জ্বলজ্বল করে 
চির অপ্রাপ্তির বেদনায় 

হয়তো বা আমিও তোমার মতো 
অতলে ঝাপ দিয়েছি 
নিঃস্বার্থের চোখ বুজে 
লক্ষ আলোক বর্ষের 
বিদর্ভকালের 
শেষ ঠিকানার খোঁজে 



গার্গী মুখার্জী

রাঙামাটি 


 
এই মাটিতে জন্ম আমার 
এই মায়েরই কোলে, 
প্রথম সেদিন কেঁদেছিলাম 
তাকেই মা মা বলে । 
হামাগুড়ি পায়ে চলা 
সবই তার বুকে, 
খেলাধূলা নাচ গান 
কেটেছে দিন সুখে । 
ছোটবেলার পুতুলখেলা 
ঝালঝাপ্পার গাছ, 
বাঁশবাগানের মর্মর সুর 
মাটিগন্ধের কাছ । 
রাখালছেলের গরুর সাথে 
নগ্ন পায়ে চলা, 
রাঙামাটির রঙিন উড়ান 
সকাল সন্ধ্যেবেলা । 
রাঙামাটির পথের ধারে 
আকন্দ হাসি ফুল, 
তুলতে যাওয়ার তাড়ায় 
পড়াশোনায় ভুল ।
সারা গায়ে ধুলো মেখে 
খেয়েছি খুব বকা, 
এসব কথা মনে পড়ে 
যখন থাকি একা । 



১৫ এপ্রিল ২০১৫

মহম্মদ সামসুর রহমান

বাঁধ ভাঙা নদীস্রোত

নদীর কূ্ল ছাপিয়ে যাচ্ছে
শুরু হয়েছে অসম্ভব ঢেউ
অসম্ভব তরঙ্গ স্রোত;
সারা শরী্র কুয়াশায় ঢাকা
শরী্রেও ভীষণ ঢেউ, ভীষণ তোলপাড়;
এক সময় নদী্র বাঁধ গেল ভেঙে
বয়ে চলেছে অনবরত নদীস্রোত
স্রোতে ভাসছে কবিতা - বিবশ পান্ডুলিপি ;
স্রোতে তৈরি হয়েছে কবিতার সঙ্গম,
জলের ওপর ছড়িয়ে আছে কবিতার আলপনা ;
গড়ে উঠেছে শব্দ তরঙ্গের সাম্রাজ্য
বিরাট বিরাট সব প্রাসা্দ ;
কখন বাঁধ ভাঙবে কেউ জানত না ;
ভেঙে গেলে কি আর করার আছে ?
সহ্য করতেই হয় কবিকে কিংবা
কবিতার সহৃদয় পাঠককে
স্রোতের নাম যে ব্যথা । 



রাজেশ চন্দ্র দেবনাথ

বাতাস


বরফের বালিশে

ঐতিহ্য একাকার

অনায়াসে বিনোদন শেষে

ভাঙনের অভিমান

পকেটে গুজে নেয়

রাতের কেরানী

স্বনির্বাচিত ঘৃণাগুলো নিয়ে

প্রতিরোধ গড়ে তুলে

আঞ্চলিক বাতাস




মৌসুমী রায় ঘোষ

এলাডিং-বেলাডিং

গাছের পাতা চুঁয়ে সময় 
রাত নিশিফাঁদ জেগে
পেঁচকগোলক ঘোরে লক্ষ্মীর খোঁজে
আত্মহনন শৌখীনতা হয়
শিল্প প্রদর্শনের খেলা ।
রামধনু বেয়ে কবিতারা নেমে আসে
এলাডিং-বেলাডিং রং থেকে রং
আকাশপার্ক - মেঘভেলায় মেঘবালিকা
দাবার মনচাল গোপন রাখার চেষ্টা
ছেদ দৈনন্দিন জীবনদাঁড়ি
চালটেপা পরীক্ষা। শৈশবক্রন্দন
ডুবে মরে জল 



পলাশ ব্যানার্জী

চল রঙ মাখবি ....

আয়রে তোরা যাবিরে যদি
আয়রে ছুটে আয়,
উড়ছে ফাগ, ঝরছে পাতা
সময় বয়ে যায় 

মাখবো রঙ সাজবো সঙ
বাঁধন ছাড়া আজ,
ফাগুনে আজ করব খেলা
থাকনা যত কাজ 

জীবনটা আজ রঙীন করে
রাঙিয়ে নেব আয়,
ভেদাভেদের বসন ছিঁড়ে -
প্রাণেরই গান গায় 



সৌরভ হোসেন

ঝরাফুলের হিসেব

কটা ঝরা ফুলের হিসেব  রাখে গাছ .... একটাও না
পাতা ঝরার নিশ্বাসও গায়ে মাখেনি কখনও
শুকনো পাতার মৃত্যু-গন্ধ শুঁকে যে প্রেম ....
সেও কখনো রং মাখেনি
হিসেব রাখি আমি
রংও মাখি আমি
শুধু শ্বাস মাপার উত্তরাধিকার নেই আমার
কারণ ....
প্রেমের খোসা ছাড়ালেও
আমি কখনও প্রেম খুন করিনি