০৩ আগস্ট ২০১৫

৩য় বছর ৮ম সংখ্যা

'বৃষ্টি' সংখ্যা 




অনল আবেদিন

বৃষ্টি 

আহা কী বৃষ্টি! 
অপূর্ব সৃষ্টি
টুপটাপ
ঝিরঝির
তুলতুল
দমকা হাওয়া
মুষল ধারা
ইলশেগুড়ি
বরফকুচি
মুচকি হাসি
জাপটে ধরি
বৃষ্টি হাসি
আহা কী বৃষ্টি!
সুন্দর সৃষ্টি
নাচে আনন্দ
আনন্দে নাচি
ভাজামাছে ভোনাখিচুড়ি
আচার পাপড়
বৃষ্টিদিনে তোমার সাথে 
বৃষ্টিরাতে তোমার আদর
বৃষ্টিপাত বাঁদর বাঁদর
আহা কী বৃষ্টি! কষ্টসৃষ্টি

এত অনাসৃষ্টি 
দয়ামায়াহীন ধারাজল
পাখিদের কথা ভাবনায় কই
নেই ভাবনায় দিনমজুর 
কুলি কামিনের রুটিবুজি নেই
সৃষ্টির ধারাজলে অনাসৃষ্টিও 
তবে নাচে তা তা থৈ 



কবিরুল ইসলাম কঙ্ক

বৃষ্টি ভেজা 

আমতলাতে কিশোরী মন
পটলচোখে বিজলি,
বর্ষাদিনে আদল নেয়ে
এই মেয়ে তুই মজলি ।

লাঙল কাঁধে ফিরছে ও কে ?
কালো পাথর গড়ন,
বৃষ্টি মাখা হৃদয় তোর
তাকাস না মেয়ে, শোন 

চাষার ছেলে বনমালী
ত্বক রোদে পোড়া,
আমতলাতে একলা মেয়ের
হৃদয় প্রেমে ভরা ।

তাকায় মেয়ে মাটির দিকে
অসংখ্য সংঘাত,
চাষার ছেলে একলা মেয়ের
জড়িয়ে ধরে হাত ।

আমতলাতে ভিজছে দুজন
আমরা সবাই জানি,
বৃষ্টি ভিজে ওরাই লিখুক
নিজেদের কাহিনী ।





শুভঙ্কর ঘোষ

বৃষ্টি-চোর

মিষ্টিমুখের বৃষ্টিকথায়
ভিজতে চাইলে বল,
দুজন মিলে গড়ব মেঘে
বৃষ্টি-চোরের দল ৷

দিগ্বিদিকের সৃষ্টিছাড়া
বর্ষাতি মুখ চিনে,
ওদের দেব মেঘ উপহার,
বৃষ্টি পুতুল কিনে ৷

ঘর হবে এক ঝড়ের মত
রঙধনু, মেঘ ফুটবে,
মুছতে ব্যথা শুকনো মুখের
ঘোড়ার মত ছুটবে ৷

বৃষ্টি-চুরি সৃষ্টি-চুরি
সকল চোরের দেশে,
বলবে দেখো বৃষ্টি হলাম
বর্ষাঋতুর বেশে ৷





সৌরভ হোসেন

বৃষ্টি-প্রেম
 
গাভীন-নদীর বক্ষবিভাজিকায় প্রেম ঢালছে
সাবালক বৃষ্টি
অনাহত মেঘ লজ্জার মলাট ছেড়ে ছড়াচ্ছে
শরীরী উত্তাপ
আজ জানালা উদোম কর ঝাঁপটা লাগুক বেহুশ- প্রেম
বাতাসের ছৌ নাচ স্নান সেরে নিক ষোড়শী জলে/
আমি ওড়নামেঘ ভিজতে ভিজতেই প্রেমিক হব 
মিহি ধানক্ষেত বেয়ে নামবে বৃষ্টি-কাব্য। জলছবি। আর
বারান্দার গসিপ
দিগন্তকে বলে দেব রঙ মেখে এস
এখনও আকাশ ঘুমোতে যায়নি
আমার বৃষ্টি-প্রেমে এভাবেই নৌকো গড়তে থাকো
বৃষ্টির থামাটা কখনই স্টপেজ নেবে না  






জুবিন ঘোষ

বাইশে শ্রাবণ  
 
    বৃষ্টি তখন তন্ময় 
    বাইশ শ্রাবণ রাতে 
জানল কে সে প্রেমের আলাপ 
                    জ্যোৎস্না গলা চাঁদে । 

    বৃষ্টি তখন নির্বাক
    উজান স্বেচ্ছাচার 
এবার বুঝি কিশোরী 
                    ভাঙল নদীর পার ।  

   বৃষ্টি তখন ভাটিয়াল 
    মাতাল নৃত্য এসে 
খবর এলো শ্রাবণী 
                    তলিয়ে গেছে ভেসে !  





পলাশ ব্যানার্জী

বৃষ্টি এলে .....

বৃষ্টি এলে রাস্তা ভেজে
ভেজে শরীর মন ,
বৃষ্টি এলে কল্পনাতে
উঠবে আলোড়ন ।
বৃষ্টি এলে গাছগাছালি
নতুন রূপে রসে ,
বৃষ্টি এলে প্রকৃতি তার
নতুন অঙ্ক কষে ।
বৃষ্টি এলে পাখির বাসা
কচি কাঁচারা ভেজে ,
বৃষ্টি এলে বাংলা ভেজে
আপন রূপে সেজে ।
বৃষ্টি এলে গলির মোড়ে
হাঁটু সমান জল ,
বৃষ্টি এলে বস্তি ছেলে
নামবে নিয়ে বল ।
বৃষ্টি এলে চাষীর ঘরে
উঠোন ডোবা জল ,
বৃষ্টি এলে  বন্যা আসে
চোখ যে ছলছল  ।



জৈদুল সেখ

আকাশের ঝর্না


যেভাবে ইচ্ছে সেইভাবেই ঝর
দুঃখের সব বাঁধ ভেঙে সৃষ্টি কর
জীবনের নতুন পথ, নিরাশ্রয় আকাশে, 
শিখুক সংগ্রামী ঝর্না; একা নয় বাতাসে
তুমি নেমেই এসো তোমার মতো, 
ভিজিয়ে দাও আমার ভ্যাপসা দেহ
ধুয়ে যাক জাতপাতের অহংকারী ছুঁতো
আর তোমার উপরে ভেসেই বাড়াব ভালোবাসার মোহ
আকাশে তোমাকে দেখে পাই ভয়;
আর যখন ছুয়ে দাও সবেই আমার জয় । 






সন্দীপ চট্টোরাজ

হঠাৎ বৃষ্টি


রোদ ছিল বেশ ভাল
মেঘ  এসে দিল ঢেকে 
আকাশের গায়ে মেঘ 
রোদ ছবি দিল এঁকে
গাছ গুলো থম থমে 
ভাবছে কী আনমনে ?
দমকা বাতাস পেয়ে 
ওরা ফের চনমনে
যেই শুরু ঝম ঝম 
বৃষ্টির উল্লাস 
নাকে এসে হানা দেয়
ভেজা মাটির সুবাস
ঝলসানো বিদ্যুৎ 
কর কর গুরু গুরু 
দানবের চিত্কাররে 
ভয়ে বুক দুরু দুর
রাস্তায় জল জমে 
পুকুরের চেহারা 
আজ যেন বৃষ্টিটা 
বড়ো বেশি বেয়াড়া ? 






দীননাথ মণ্ডল

আয় বৃষ্টি 


আয় বৃষ্টি আয় বৃষ্টি
গা ছমছম ঝেঁপে
টইটম্বুর পুকুর দেবো
একপোয়া সের মেপে
আয় বৃষ্টি আয় বৃষ্টি
শুকনো খরার মাঠে
কচি পাতার জোয়ার এলে
সূর্য যাবে পাটে
আয় বৃষ্টি আয় বৃষ্টি
নদীর মরা বুকে
কলকলে স্রোত ছুটলে পরে
জরা যাবে চুকে
আয় বৃষ্টি আয় বৃষ্টি
ঠান্ডা বাতাস তুলে
নাচবো আমি তা ধিনধিন 
মনের পেখম খুলে