১৬ অক্টোবর ২০১৫
সুবোধ সরকার
বাংলা
দুঃখ কষ্ট কার ঘরে নেই, আছে আমাদেরও ঘরে
আশায় আশায় তবু আমাদের বুক ধকধক করে।
বাংলা ভাষায় ঝড় উঠেছিল, উঠেছে আবার ঝড়
এই জনপদে, এই ভাষাতেই তোমার আমার ঘর।
কাকদ্বীপ থেকে কোচবিহারের পথে পথে ভাইবোন
‘মণি, মণি’ বলে কে যেন ডাকছে,
ছুটে যায় কাঞ্চন।
সোনার ছেলেরা কেন ভিনদেশে সোনা খোঁজ করে ফেরে?
আমরা কি তবে হারার আগেই বসে আছি সব হেরে?
হতেই পারে না, লক্ষ লক্ষ হাতের ওপরে হাত
সব বাঙালিরা বাংলা বললে ঘটে যাবে বাজিমাৎ।
আছে অনাহার, আছে মারামারি, তবু আছে ভালবাসা
গর্ব
করার মতন রয়েছে একটি মাতৃভাষা।
আমরা গরিব, তৃতীয় বিশ্ব, বেঁচে
আছি জেদ ধরে
শ্যামলকান্তি দাশ
তথাস্তু
বনের বাঘ, পথ ভুল করে লোকালয়ে ঢুকে পড়েছি,
একটু হালুম হুলুম না করলে চলে ?
এইটুকুই তো বাঘের অলঙ্কার!
মনের দুঃখে আজ সারাদিন ঝাঁপাঝাঁপি করলাম,
হুঙ্কার দিলাম। কেউ ঘুরেও দেখল না।
অঞ্চলপ্রধান বদ রাগী মানুষ
পেটে লাথ মারলেও এক ছটাক বিদ্যে বেরোবে না।
তিনি আমাকে ঘাস পাতার পাহাড় দেখিয়ে বললেন:
যান, খেয়ে নিন,
বেশি চেঁচালে জিভ ছিঁড়ে ফেলব কিন্তু!
তাঁবুর ভেতর থেকে তাঁকে একবার
জুলজুলে চোখে নিরীক্ষণ করলাম,
তারপর অস্ফুট শব্দে বললাম : তথাস্তু!
কাজল চক্রবর্তী
অক্ষর জন্মের অধিকার
একটা ঘাসের ওপরে জেগে আছো ফুল
সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে পাখিরা উড়ে গেল---
ঘাসফুল তুমি একা।
আমার হাত ভিজে আছে শিশিরের জলে
তোমাকে ছুঁতে ভয় হয়।
তোমার নিকটে গেলে অভিমান তপ্ত হয়ে ওঠে
ভয় হয়, এই দূরে বসে দেখা ঘাসফুল---
যদি নুয়ে পড়ে পুত্রস্নেহে;
তবে আমার অঙ্গীকার---!
আমি দূর থেকে দেখি তোমার পৃথিবী
অক্ষরজন্ম দান করেছো তুমি।
এই হাত ছুঁয়ে শেষ জল-বিন্দুর
লাল শিখা পৌঁছে যাবে তোমার শীতল দু-ঠোঁটে
১৪ অক্টোবর ২০১৫
কবিরুল ইসলাম কঙ্ক
হৃদিগান
তোমার কাছে সকালের রোদ
বিকেলের গোধূলি,
তোমার কাছে জমিয়ে রাখা
মনের বাঁধন খুলি ।
বিকেলের গোধূলি,
তোমার কাছে জমিয়ে রাখা
মনের বাঁধন খুলি ।
তোমার কাছে সন্ধ্যেতারা
তোমার কাছে আলো,
তোমার কাছে চাঁদ সূর্য
আকাশপ্রদীপ জ্বালো ।
তোমার কাছে আলো,
তোমার কাছে চাঁদ সূর্য
আকাশপ্রদীপ জ্বালো ।
তোমার কাছে আয়নামহল
নিজের প্রতিচ্ছবি,
তোমার কাছে পদ্য লেখা
পংক্তিগুলো সবই ।
নিজের প্রতিচ্ছবি,
তোমার কাছে পদ্য লেখা
পংক্তিগুলো সবই ।
তোমার কাছে রাগ-বিরাগ
তোমার কাছে গান,
তোমার কাছে প্রিয় কথা
গোপন অভিমান ।
তোমার কাছে গান,
তোমার কাছে প্রিয় কথা
গোপন অভিমান ।
তোমার কাছে হারিয়ে যাওয়া
এবং ফিরে আসা,
তোমার কাছে রাখা আছে
হৃদয় ভালোবাসা ।
এবং ফিরে আসা,
তোমার কাছে রাখা আছে
হৃদয় ভালোবাসা ।
ইন্দ্রনীল
অবসর
কত গাছ পথের ধারে নিশ্চুপ
যারা অবসরে আজ,
মন্থনে যদি উঠে আসে
বেঁচে থাকার বীজমন্ত্র
তবে অবসরেও
মৌন মিছিল করা যেতে পারে ।
যারা অবসরে আজ,
মন্থনে যদি উঠে আসে
বেঁচে থাকার বীজমন্ত্র
তবে অবসরেও
মৌন মিছিল করা যেতে পারে ।
বেঁচে থাকার তাগিদ বেড়ে যায়
অবসরে,
ভোগ আর ভোগান্তির মাঝে
যেটুকু দীর্ঘশ্বাস....
সেটুকু বাদ দিলে শুধু নকল দাঁত
শরীরের রন্ধ্রে রন্ধ্রে তখন
অবসরের হিমেল হাওয়া ।
অবসরে,
ভোগ আর ভোগান্তির মাঝে
যেটুকু দীর্ঘশ্বাস....
সেটুকু বাদ দিলে শুধু নকল দাঁত
শরীরের রন্ধ্রে রন্ধ্রে তখন
অবসরের হিমেল হাওয়া ।
কৌশিক বড়াল
প্রেয়সী তোমায়
দরজায় ঠেস দিয়ে দাঁড়িয়ে আন্তরিক
চাতক পিপাসা, পুড়ে যায়
ভিতরে কামনা
অস্থির আদল ভেঙে মনপাখি উড়াল দেয়
হাজারো আকালি রঙ মুছে ন্যুব্জ গোধূলি
স্বপ্নিল সম্পর্কে তোলপাড়, খরতাপ শেষে
বৃষ্টি নামে অনাবাদী জমিতে
চাতক পিপাসা, পুড়ে যায়
ভিতরে কামনা
অস্থির আদল ভেঙে মনপাখি উড়াল দেয়
হাজারো আকালি রঙ মুছে ন্যুব্জ গোধূলি
স্বপ্নিল সম্পর্কে তোলপাড়, খরতাপ শেষে
বৃষ্টি নামে অনাবাদী জমিতে
প্রসংসা কৃতজ্ঞতায় মোড়া রোজনামচা
জ্যোৎস্নাগড়া পেলব সুখস্মৃতি, মনের কোণে
উঁকি দেয় এক চিলতে প্রেম
জ্যোৎস্নাগড়া পেলব সুখস্মৃতি, মনের কোণে
উঁকি দেয় এক চিলতে প্রেম
উদ্বেগের স্বরলিপি পাঁজরে আত্তীভূত
প্রতীকি ভালবাসায় খাতাভর্তি কবিত, হিমেল বাতাসে
নগ্ন নির্জন হাত
নিবিড় সান্নিধ্য খুঁজে নেয় অলৌকিক মৌনতাপ্রতীকি ভালবাসায় খাতাভর্তি কবিত, হিমেল বাতাসে
নগ্ন নির্জন হাত
নিরাকার বায়ু নিষ্কাম নির্বিকার, আশার ডিঙ্গিতে
বেঁচে রয় টুকিরো সংলাপ, প্রেয়সীর ঈপ্সিত
মনোবাসনার স্মৃতি হয়ে ।
মহম্মদ সামসুর রহমান
একুশ শতক কিংবা আধুনিক
আসতে দেরি হলে তুমি আর অপেক্ষা করোনা,
ভালোবাসার মেধাবী পাঠে এখন শুধু খামখেয়ালি ডেটিং
ফেসবুক,ওয়াটস্অ্যাপ,চাটিং
মুড ভালো নেই কবিতার,আঁতেল মার্কা পদ্যেরও
তোমার প্রেম বড্ড বেলাল্লাপনা;
আমি কনফিউজড;নিদারুণ প্রশ্রয় দিতে গিয়ে
আকাশ ভরা সূর্য তারার মাঝেও এমন সর্বনাশা আশকারা;
বেয়াড়া ঈশ্বরের বুক ছুঁয়ে নেমে যাচ্ছে রোমশ ভালোবাসা;
নিজেকে খুঁতহীন করতে গিয়ে যে নোংরা হাতে পূজা করি,
গুরুতরভাবে তাকে ধুয়ে দিই তরল গন্ধে;
‘নো স্মোকিং’ ফলকের সামনে উৎকট ভাবে নাড়ছি
নগ্ননির্জন_একাকী;
চুমু-বিষের তফাৎ খুঁজতে নির্মাণ থেকে বিনির্মাণে
গার্গী মুখার্জী
স্মৃতিপট
হারিয়ে গেছে রাঙা পথে
উদাস বাউল সুর,
চড়া রোদে গাছের ছায়ায়
ভরপুর দুপুর ।
উদাস বাউল সুর,
চড়া রোদে গাছের ছায়ায়
ভরপুর দুপুর ।
হারিয়ে গেছে রাখাল বাঁশি
গরু ভরা মাঠ,
হারিয়ে গেল জল টলটল
দিঘির বড় ঘাট ।
গরু ভরা মাঠ,
হারিয়ে গেল জল টলটল
দিঘির বড় ঘাট ।
কোথায় গেল বাঁশের বনে
পাতার শন শন,
বৈশাখী সেই সন্ধে বেলার
সুরেলা কীর্তন ।
পাতার শন শন,
বৈশাখী সেই সন্ধে বেলার
সুরেলা কীর্তন ।
হারিয়ে গেছে বাগদি বুড়ি
সেই গ্রাম্য সুখ,
বুকের মাঝে উথালপাতাল
অতৃপ্তি অসুখ ।
হারিয়ে গেল ছোট্টবেলার সেই গ্রাম্য সুখ,
বুকের মাঝে উথালপাতাল
অতৃপ্তি অসুখ ।
সুখের স্মৃতি যত,
বুকের মাঝে বেদনা জাগায়
ঝরা ফুলের মতো ।
এতে সদস্যতা:
পোস্টগুলি (Atom)