২৬ জানুয়ারী ২০১৬

কবিরুল ইসলাম কঙ্ক


বাউলিয়া

এক সাথে নেমে আসে উষ্ণতা
শীত রাতের বর্ম ভেদ করে কুয়াশা আগুন
অন্য পারে ভোর হওয়ার আবেগ প্রস্তুতি
নৌকা ও জলের পিচ্ছিল শব্দ

মধ্যরাতে অবিশ্রান্ত ছুটে চলে ঘোড়া
বন্যভূমিতে নীরব চাঁদের সাদা আলো
পাড় ঘেষে নেমে আসে উদাস বাতাস
উহ্য থেকে যায় প্রিয় হৃদয়

ভরা রোগে গাণিতিক সমাধান সূত্র
এবং ঝড়বৃষ্টির প্রচুর হাহুতাশ
গাঙের মাঝে সূর্য ভালোবাসা
বুক জুড়ে সেই নিথরতার রাজত্ব 






কৃষ্ণা দাস

মাগন

কাঁহাতক আর সাদা ক্যানভাসে কল্পিত রঙ তুলির আঁচড়, 
কৃষ্ণচতুর্দশীর ঘন দীর্ঘশ্বাসে লেপটে , 
তার চেয়ে ডেকে নাও সদ্য ভাঙা শ্মশ্মান কলসে, 
ডেকে নাও ঊষর ধান কাটা ফাটা মাঠের রিক্ততায়, 
ধ্বংসের গানে মাতাল হাড়িয়া মাদল বাজাক, 
না হয় হোক শুরু তছনছ ছিনতাই, 
দাবিহীন এ জন্মের দুঃখ সন্তাপ , 
যুদ্ধবাজ প্রতিশোধ মরবার আগে ফণা নাচাক একবার, 
বিস্মৃতি এস, কাঁহাতক দেরি আর ! 







কৌশিক গাঙ্গুলি

একটি খোলা চিঠি

আপনার সঙ্গে দেখা হলেই মাষ্টারমশাই , 
দেখবেন আমার দুচোখে স্বপ্নের অসুখ । 
বুঝিনা কিভাবে কাটবে জীবন বেপরোয়া , 
এই বাউন্ডুলেপনা আগুন ধরায় না 
শুধু খ্যাপাটে ঝড় উদাসীন মানুষের মতন । 
তারপর মাষ্টারমশাই কোথায় রাখলেন সেই কাঁটার মুকুট ?
দেখুন আমার সঙ্গে ক্রুশকাঠ , ছেঁড়া ট্রাউজারের পকেটে খোলামকুচি । 
পৃথিবীর অবশিষ্ট প্রতিটি সবুজ প্রান্তরে আমার তাবু খাটানো 
আর সারা আকাশজুড়েই রাজত্ব , গান গেয়ে বেড়াই গলা খুলে 
কোনো ব্যাকারণ না মেনে প্রাণের তাগিদে । 
যাদের বুকের মধ্যে ঘরবাড়ি , যাদের হাসির মধ্যে অজস্র মণিমুক্তো ,
 যারা হৃদয় ছোঁয়া মানুষ - এক পৃথিবী ভালোবাসা ,  
মাষ্টারমশাই আমরা তাদের শুধুই তাদের ।  







মহম্মদ সামসুর রহমান

ফুল হয়ে থাকো 

বরং তুমি ফুল হয়ে থাকো 
যেমন ছিলে আগে 
অনেকদিন আগে; 
ফুল না হলেই অপরের হাতে নষ্ট হতে হয়; 
কবিতার এইটুকুই দাবি 
তুমি ফুল হয়ে থাকো; 
কবিরা ফুল ভালোবাসে 
কবিদের শরীরে কোনো বাগান নেই 
কো্নো গাছ নেই 
তবু কবিরা ফুল ভালোবাসে;
কবিতার হাত ধরে কবিতার পায়ে ঘুঙুর পরিয়ে 
কবিরা স্নান করে কবিতার জলে; 
ফুল দিয়ে মালা গাঁথে কবি 
পরিয়ে দেয় কবিতার গলায় 
কবি মুক্তি চায়- 
প্রেম কবিকে মুক্তি দেয়না কোনোদিনই... 



অনুভব কর

উন্মাদের ডায়েরি থেকে
লেখার জন্য কাগজ লাগে, কলমও। 
ইদানিং ডেস্কটপ লাগে অথবা ল্যাপটপ, 
ট্যাবলেট লাগে অথবা স্মার্টফোন। 
অথচ, একজন নারী ও একজন পুরুষের 
গোপনাঙ্গ রচনা করে কত শত মহাকাব্য। 

যে বর্ণমালা উপেক্ষিত অথচ গুরুত্বপূর্ণ 
তাদের খোলামেলা চর্চার কথা সিলেবাস বলে। 
তারপরও ক্লাস এইটের রূপমের ব্যাগে 
জীবনশৈলী নয়, চটি বই মেলে।