০২ সেপ্টেম্বর ২০১৭

গল্প - সৌরভ হোসেন

পিছুটান

     শিয়ালদা স্টেশনে নেমেই প্রথম ফোনটা পেল সবদুল ।রিংটা ভাল বোঝা যাচ্ছিল না ।গ্যাঞ্জামে চাপা পড়ে যাচ্ছিল । থিকথিকে ভিড় ।হুড়মুড় করে লোক এদিক ওদিক ছুটছে । হুটপাট করে লোকে তাকে ঠেলে চলে যাচ্ছে । তার যাত্রাটাও বহু ঠেলার ফল । বেঁচে-টেচে, ধার-দেনা করে কোনরকমে বিমান ভাড়াটা জোগাড় হয়েছে । তারপর কাজের ভিসা পেতে দালালকে দিতে হয়েছে গুচ্ছের ঘুষ । কাজটা অবশ্য তার খুব পছন্দের । মক্কাশরিফ ঝাড়পুছ দেওয়া।মায়নেও ভাল।মাস গেলেই পনেরশো রিয়াল । অবসর সময়ে অন্য কোথাও ঠিকে কাজও করতে পারবে।সেক্ষেত্রেও দশ বারো হাজার টাকার উপরি ইনকাম।তাছাড়াও ছোট্টবেলা থেকে মিলাদ-মজলিসে শুনে এসেছে যে মক্কা-মদীনার কথা , সাহাবা আকরামদের কথা , আল্লার পিয়ারা নবী হযরত মহম্মদ , হাসান- হোসেনদের কথা , গায়ের লোম খাড়া করা গল্প-কাহানী , সেই পবিত্র ভূমিতে সে স-শরীরে হাঁটবে , শ্বাস নেবে , স্বচক্ষে সব দেখবে , ভাবতেই তার গা কাঁটা দিয়ে উঠছে । যদিও পিছুটান জব্বর পোক্ত । বাড়িতে মরণাপন্ন বিধবা মা । একমাত্র খাটনে পিঠাপিঠি বড় ভাই মইদুল । তার কাঁধেই সংসারের জোয়াল । সংসারের গুণ টানতে গিয়ে তার আর বিয়ে করা হয়ে ওঠেনি । খেটে-খুটে যা কিছু জমিয়ে ছিল , একমাত্র বোনটার বিয়ে দিতেই সব নিঃশেষ হয়ে গেছে । থাকার বাড়িটাও সেভাবে করে উঠতে পারেনি । ইটের দেওয়াল আর টালির ছাউনি দিয়ে কোনরকমে একটা মাথা গোঁজার ঠাঁই বানাতে পেরেছিল । মইদুলের অনেক দিনের ইচ্ছে ছোট ভাইকে সৌদি পাঠানো । ওখানে নাকি টাকা উড়ে বেড়াই ! গাঢ়ি গাঢ়ি টাকা । মইদুল এদিক ওদিক খোঁজ খবর নিয়ে দেখেছে, যেইই আরবে গেছে সেইই ফুলে ফেঁপে উঠছে ! বছর ঘুরতে না ঘুরতেই কাঁচা বাড়ি পাকা ! গাড়ি ! বাজারে জায়গা ! তারও একবার ইচ্ছে জেগেছিল । কিন্তু মরণাপন্ন মা’কে রেখে তার পক্ষে সে ইচ্ছে পূরণ করা সম্ভব হয়নি । অগত্যা ছোট ভাইয়ের মধ্যে দিয়েই নিজের ইচ্ছেপূরণ ।

“ ট্রেন থেকি নেমিছিস ?”  মোবাইলে মইদুলের থিতানো কণ্ঠের আওয়াজ ।

 “ হ্যাঁ , এইমাত্র নামনু । শিয়ালদা ।“  থড়বড় করে উত্তর দিল সবদুল ।

 “ ইয়ারপোর্টে ঠিক ভাবে যাতে পারবি তো ?”  মইদুলের কণ্ঠে আশঙ্কা !

“ হ্যাঁ ,হ্যাঁ ,কুনু অসুবিদা হবে না খ । ট্যাক্সি ধরি চলি যাব ।“ সবদুলের কথায় আত্মবিশ্বাস ঝরে পড়ে । আত্মবিশ্বাস থাকবেই বা না কেন ? কলকাতায় তো সবে আসছে না ? ঢের ক-বার এসেছে । রাজমিস্ত্রির জোগালের কাজ করেছে টানা তিন বছর । মাথায় ফেট্টি বেঁধে বাঁদুরের মতো ঝুলে বিশাল বিশাল অট্টালিকার সুউচ্চ ছাদ থেকে এ শহরটা তার দেখা ।

“ মা ক্যামুন আচে ? বুক জ্বালা পুড়াটা কি কমিচে ?”  মা-এর তোখিদ করে সবদুল । কণ্ঠস্বর ধোঁকাচ্ছে । পিঠে ঢাউস ব্যাগ ! থপথপ করে হাঁটছে । সামনেই ট্যাক্সি স্ট্যান্ড।

“হ্যাঁ , কমিচে । এখুন ভালো আচে । মা’র কথা তোকে চিন্তা কত্তে হবে না খ । আমরা তো আচি । তুই তাড়াতাড়ি ইয়ারপোর্ট চলি যা । লেট করিস ন্যা । উখানেই হাত-মুখ ধুয়ি আরাম লিবি ।“

মইদুলের কথা জড়িয়ে আসে । বুকের ভিতর থেকে কষ্টের দলা ঠেলে উঠছে । কিন্তু শক্ত মনের মানুষ মইদুল সে কষ্টকে কথাই মাখতে দেয়না ।

সবদুল ট্যাক্সি ভাড়া করল । চারটে পঁয়তিরিশ এ ফ্লাইট । সবে দেড়টা বাজল । ভাবল, ঠিকাদারকে একটা ফোন লাগায় । লোকটার এখন ইয়ারপোর্টে থাকার কথা ।

“ হ্যালো, আমি সবদুল বুলছি । আপনি কতি আছেন ? ও আচ্ছা । আমি আসচি। ট্যাক্সিতে।“

ফোনটা রেখে দিল সবদুল । সবকিছু ঠিকঠাক আছে । শুধু বাড়ির জন্য তার মনটা আনচান আনচান করছে । একটা পিছুটান তার জালি নাড়ি-ভূড়িকে কটকট করে কাটছে । নামলা সবদুল ভাবে, এভাবে কি মরণাপন্ন মা’কে বিছানায় ফেলে রেখে বিদেশ খাটতে যাওয়া ঠিক হল ? পরলোকে গিয়ে বাপটাকে কী কৈফৎ দেব ?

ট্যাক্সিটা যখন শহরের ব্যস্ত রাজপথ দিয়ে সাঁ সাঁ করে ছুটছে, সবদুলদের বাড়িতে তখন যমে মানুষে টানাটানি শুরু হয়েছে । কারিমন বেওয়ার খুটোল চোখগুলো ঢেলা হয়ে বেরিয়ে যাচ্ছে ! মাঝে মাঝে ঝিকছেন । কাঁথার বিছানাটায় গড়াগড়ি দিচ্ছেন । তার পেট জ্বলে পুড়ে খাক হয়ে যাচ্ছে । ঘুষঘুষ করে শ্বাস নিচ্ছেন । যন্ত্রণাটা মাঝে মাঝে মারণ কামড় দিচ্ছে । খক খক করে কাশছেন দুমড়ানো শরীরের কারিমন । কফ-এর সাথে উঠছে রক্তের দলা ! ব্যামুটা আজ নতুন নয় । স্বামী মরা কারিমন গত আড়াই বছর ধরে ভুগছেন ! ফুসফুসের সংক্রমন । ডাক্তার সাফ বলে দিয়েছেন, বাঁচার সম্ভাবনা কম । ফুসফুসের অনেকটা অংশ নষ্ট হয়ে গেছে । লাঙ্কস ক্যান্সার !

ট্যাক্সিটা মুল ফটকের গা ঘেঁষে দাঁড়াল । দমদম নেতাজী ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট । কানে ভেসে আসছে বিমান ওঠানামার বিকট আওয়াজ । অজগাঁয়ের ছেলে সবদুলের সব তালগোল পাকিয়ে যাচ্ছে ! নতুন জায়গা ! চোখ ধাঁধানো প্রবেশদ্বার ! সে শুনেছে এখানে অনেক ফ্যাচাং । ঘনঘন চেকিং । ঝটঝামেলা । প্রাইমারি পাশ সবদুলের কাছে এসব বুঝে ওঠা নাকে চুড়ুনের সামিল ! কপালে ঘাম চিকচিক করছে তার ! ঠিকাদারকে ফোন লাগাল সে । বলল, সে দুই নম্বর গেটে অপেক্ষা করছে ।

                                                দুই

 সব বন্দোবস্ত শেষ । ফ্লাইটের আর আধ ঘণ্টা দেরি । সবদুল মুঠোফোনটা বারবার ডায়াল করে যাচ্ছে । কিন্তু কেউই রিসিভ করছে না ! চোখে-মুখে বিরক্তির ছাপ । মাথায় ঠকঠক করছে দুশ্চিন্তার হাতুড় । মা’র কি কিছু হল ! যন্ত্রণাটা কি আরও বেড়ে গেল ! মা’কে কি সবাই হাসপাতাল নিয়ে গেছে ? নিশ্চয় সবাই খুব ব্যস্ত আছে । তানাহলে ফোন কেন ধরবে না ?

 সবদুলের চোখ ছলছল করে ওঠে । একেবারে মা পাগল ছেলে । গাঁয়ের লোকে বলে, ছুঁড়া ধারি বয়সেও মায়ের দুধ ছাড়েনি । একদণ্ডও মায়ের আঁচল ছাড়ত না । কারিমন যেখানে গেছেন কোল মোছা ছেলেটাকে সঙ্গে করে নিয়ে যেতে হয়েছে । তানাহলে তার কাঁদন চুপানো যেত না । সেই ছেলে আজ ভিনদেশ পাড়ি দিচ্ছে ! একটু পরেই পাখির মতো ডানা মেলে বিমানটা আকাশে উড়ে যাবে । সবদুল কতদিন ভু ভু শব্দ শুনে উঠোনে ছুটে এসেছে । ঘাড় কাত করে উড়ে যেতে দেখেছে বিমান ।

সবদুল এবার ভিতরে ভিতরে ডুকরে উঠছে । যাকে পাচ্ছে তাকে ফোন লাগাচ্ছে । কিন্তু কেউই তার ফোন রিসিভ করছে না ! তার ধন্দটা আরও দানা বাঁধে ! আশঙ্কার মেঘে ঝড় ওঠে । নিশ্চয়ই কিছু অঘটন ঘটেছে ! সবাই ব্যাপারটাকে গোপন করতে চায়ছে । তবে কি মা….

 সবদুলের চোখ ফেটে জল আসে । অন্তরটা হু হু করে ওঠে । আচমকা হুট করে চেয়ার ছেড়ে উঠে পড়ে । মনের মধ্যে জোর দন্দ শুরু হয় । আরব যাব, না যাব না ? এই ‘যাব’ আর ‘যাব না’ র মধ্যে জোর টক্কর বাঁধে । ওদিকে তাদের নুন আনতে পান্তা ফুরনোর দৈন্যদশার কথাও মনে ঘা দেয় । এত কষ্টের অর্জিত টাকার বিনিময়ে বিদেশ পাড়িটা হেলায় নষ্ট করলে সংসারটা ভেসে যাবে । এতগুলান টাকা জলে ফেলে কোন মুখে বাড়ি ঢুকবে ? তাছাড়া এলাকায় সেরকম কোন কাজও নেই !

একসময় টগবগ করে ফুটতে থাকা ঘেলুটা থির হয় সবদুলের । পরিবারের অভাব-অনটন আর দারিদ্রের কড়াল থাবা তার মনের দোটানাভাবকে দমিয়ে দেয় । বিদেশ পাড়িটাকেই শিলমোহর মারে । সাত-পাঁচ ভাবতে ভাবতে ফ্লাইটেরও সময় হয়ে যায় । থড়বড় করে বিমানে উঠে বসে সবদুল । তারপর একসময় বিমান রানওয়ে ধরে ছুটতে ছুটতে টেকঅফ করে ।

                                                  তিন

 বিমানবন্দরের ওয়েটিং রুমে অপেক্ষা করছিলেন কপিলের ( ঠিকাদার ) লোক । সবদুল আগে থেকে ঠিক করে দেওয়া সংকেত ধরে তার সঙ্গে দেখা করে । লোকটা তাকে সঙ্গ নেন । লোকটার পরনে আরবিয়ান বেশভুষা । গায়ে জোব্বা । মাথায় ফেট্টি । লম্বা হাংড়াচাংড়া চেহারা । লোকটা আরবিতে কী সব ফদফদ করে বলে যাচ্ছেন । সবদুল ওসব কিচ্ছু কান করছে না । তার মাথায় এঁটে আছে তার মা । ছ-ঘণ্টার বিমান জার্নিতে তার মাথায় আঁকড়ে ছিল তার রোগগ্রস্ত মা ।মায়ের যন্ত্রণাক্লিষ্ট মুখ । তাদের লিচিনপুরের বাড়ি । নিকানো উঠোন । কান্টার সজিনা গাছ । মায়ের হাতের রুটি । বেগুন পোড়া ভাত । বালুনে ভাজা মুড়ি । দিঘড়ি দেওয়া ছাগল ।

সবদুল লোকটাকে আকার-ইঙ্গিতে বুঝিয়ে  তার কাছ থেকে মোবাইলটা বাগায় । ফটাফট বাড়ির নম্বরে ফোন লাগায় । দু-বার লম্বা রিং বেজে ফোনটা কেটে যায় । মইদুলের হাতে মোবাইল । অথচ রিসিভ করে না । সে কোড নম্বর দেখে বুঝে নেয়, এটা সৌদির ফোন । নিশ্চয় সবদুল । বাড়িতে তখন কান্নার ধুমায়িত স্বর । মইদুল ঠাহর করে, ফোনটা এখানে রিসিভ করা ঠিক হবে না । সে গটগট করে পা চালিয়ে পাশের ক্ষেতের নিরিবিলি জায়গায় যায় । মোবাইলটায় তখন চতুর্থবারের মতো লম্বা রিং হচ্ছে । একেবারে শেষলগ্নে ফোনটা রিসিভ করে মইদুল ।

“ হ্যালো ।“

বড়ভাই-এর কণ্ঠস্বরটা শুনে ধড়ে প্রাণ ফিরে আসে সবদুলের ।

“ তুমাদের কাহুকে ফোনে পাচ্ছিন্যা ক্যানে ?”

সবদুলের গলায় আক্ষেপ ঝরে পড়ে ।

“ ফোনটা সাইলেন্ট হয়ি গেছিল রে । যাইহোক, তুই ঠিকঠাক পৌঁছেছিস তো ?”

কথাটার মোড় ঘোরানোর চেষ্টা করে মইদুল । ভাঙা কণ্ঠস্বর ।

“ মা ক্যামুন আছে ?” জানতে চায় সবদুল ।

“ ভালই আছে ।“ অল্প কথায় উত্তর দেয় মইদুল । কথা ভারি হয়ে আসে তার ।

“ তুমার কি ঠাণ্ডা লেগিছে ? কথা বসা ক্যানে ?”

“ হ্যাঁ রে, একটু ঠাণ্ডা লেগিছে । সদ্দি হয়িছে । তুই এখন কতি আছিস ?”

“ ইয়ারপোর্টে ।“

“ কুম্পানির লোক কি লিতে এসছে ?”

“ হ্যাঁ, এসছে ।“

‘ ও, তাহলি পরে, তুই অ্যাখুন উনার সাতে যা । গিয়ি, গোজগাছ করি, ফেস হয়ি, ফোন করিস ।“

“ মা’কে একটু ফোনটা দ্যাও ?”

“ মা, মা তো অ্যাখুন বাড়িতে নাই ! কার বাড়ি য্যানো গ্যালো । তুই পরে ফোন করিস ।“

কথাটা শেষ করেই ফোনটা রেখে দেয় মইদুল । দু-চোখে জোর করে আটকে রাখা অশ্রু এবার বাঁধ ভাঙে । গাল চুঁইয়ে টসটস করে ঝরে পড়ে । ভিতরে ভিতরে গোমরায় ফোঁপানির চাপা স্বর ।

                                                       চার

   রাত দশটা । মুঠোফোনটার স্ক্রিন জ্বলে উঠল । বুঁ বুঁ করে কাঁপছে মুঠোফোনটা । মইদুল ঘাড় ঘুরিয়ে কোড দেখে বুঝল, সৌদির ফোন । নিশ্চয় সবদুল ।

“ হ্যাঁ, বুল । সব ঠিকঠাক আছে । তুই ভালো আছিস তো ?”

“ মা’কে ফোনটা দাও ভাই । মা’র সাতে কথা বুলতে খুউব ইচ্ছে করছে ।“

“ মা তো অ্যাখুন ঘুমাচ্ছে রে । ব্যারাম শরিল । ঘুম ভাঙানো ঠিক হবে না ।“

 ঘুমের বাহনা দেয় মইদুল ।

সবদুল ভাবে, তাই তো ? এখানেই তো ছটা বাজছে । ইন্ডিয়াতে অ্যাখুন রাত দশটা এগারোটা । মেল্লা রাত ! থাক, সকালেই ফোন করব ।

সকালে ঘুম থেকে উঠে উঠেই ফোন লাগায় সবদুল । মইদুল ইচ্ছে করে ফোনটা রিসিভ করে না । এবার সত্যি সত্যি সাইলেন্ট মুডে রেখে দেয় । সবদুল বারকয়েক ডায়াল করার পর কিছুক্ষণের জন্য বিরত হয় । তবু ক্ষান্ত হয় না । এবার সে আরিফাবুবুর ফোনে ফোন করে । আরিফা তাদের একমাত্র বোন । সাতসকালে ফোন বাজতে দেখে আরিফার ভিতরটা ধড়াক করে ওঠে । আবার কারও কিছু হল নাকি ! নতুন নাম্বার দেখে, কার ফোন বুঝতে পারে না সে ।

“ হ্যালো, কে বুলছেন ?”

“ বুবু, আমি সবদুল বুলছি ।“

“ সবদুল !”

নামটা মুখ দিয়ে বেরিয়েই দম আটকে যায় আরিফার । কান্নার মেঘ ফেটে পড়ার সামিল হয় । নাকে-মুখে আঁচলা ঠেসেঠুসে কোনরকমে নিজেকে সামলে নেয় । ভাঙাস্বরে জোর করে বাতাস ঠেলে আমতা আমতা করে বলে,

“ তুই ভালো আছিস তো ? কাজ ঠিকঠাক পেয়েছিস তো ? থাকার জাগাডা ক্যামুন ? যারতার সাতে মিশবি ন্যা । কারু পাল্লায় পড়বি ন্যা । মুন দিয়ি কাজ করবি । ঠিকিদারের কথা শুনবি ।“

ভড়ভড় করে বকে যায় আরিফা । কী বলে সে নিজেই জানে না । তার কথার মাঝে দাড়ি পরায় সবদুল—

“ মা ক্যামুন আছে গো ?”

আর কথা বের হয়না আরিফার । ‘থ’ মেরে যায় । নাকটা একবার জোরে সুড়ুৎ করে টানে । আঁচল দিয়ে চোখদুটো দল্লে মোছে । তারপর একবার আলতো করে গলা ঝাড়া দিয়ে বলে—

“ মা তো আগের থেকি ভালই আছে । দিব্যি হেঁটি চলি ব্যাঁড়াচ্ছে ।



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন