০৪ অক্টোবর ২০১৭
কবিরুল ইসলাম কঙ্ক
হল্লা বোল
কাঁপছে শহর, কাঁপছে গ্রাম
ভূতের মুখে পুতের নাম ।
সেসব গাঁয়ে ফুটছে ফুল
রং বাহারে মনের ভুল ।
তল্পি তল্পা সবই থাক
যেমন পারো বাজাও ঢাক ।
ঢাক বাবাজি দারুণ বাজে
বাজনা থাকে আপন কাজে ।
কাজে খুবই গন্ডগোল
চলছে দেশে হল্লা বোল ।
খাচ্ছে এবং মারছে ল্যাং
খেলছে তবু মচকে ঠ্যাং ।
বস্তা বন্দি সস্তা বুলি
যেমন খুশি দিচ্ছে খুলি ।
আমরা হবো ডিজিটাল
নাচছে হাজার পঙ্গপাল ।
টাকার খেলা চলছে বেশ
চলছে নাটক, চলছে দেশ ।
নতুন দিন মেলছে চোখ
দীপ মাইতি
ধুলোয়
লেখা
ভাঙা
পাঁচিল জড়িয়ে শুয়ে থাকা
পরগাছার
মতোই আগলে রেখে কিছু
স্মৃতিদাগ,
শহরতলির
আকাশজুড়ে সে শুধু উড়িয়ে
বেড়ায়
রাতজাগা
সব বন্দি কবুতর...
বাতিল
জাহাজঘাটের ঘাসে পড়ে থাকা
তার শরীর
খুব
চেনা জলের গন্ধে
হাতড়ে
বেড়ায় মরে যাওয়া রাতপাখিদের
নাম;
ভেজা
চোখে একদিন দেখে--ডুবে
গেছে চাঁদটাও,
নিভে
গেছে দূরের ওই টুকরো
আগুন.....
ফুরিয়ে
আসা দিনগুলোয় তাই
মলিন
হাতের উল্কিতে তার
অনেক
না বলা গল্প লুকিয়ে
রেখে
বুড়োটে
সাইকেল চড়ে পথে পথে
ঘুরে বেড়ায়
এক পুরানো নাবিক....
মৌলিক মজুমদার
পক্ষীজীবন
বৃষ্টির
কাছে যাচ্ঞা করেছি কত
অলৌকিক
আর শ্বাসরোধকারী দিন,
বৃষ্টি
কাছেই রয়েছে হয়েছে দূর
মালসা
মাদল মেঘতালুকের ঋণ।
তন্ত্রমন্ত্র
তুকতাক নেই কিছু
পাখপাখালির
জীবন কেটে তো যায়
ওম
না দেওয়া অনাথিনী ডিমগুলো
পড়ে
গেলে পর খেয়ে নেয়
হায়নায়।
বাঁচিয়ে
রেখেছি তাবৎ রত্নরাজি
ডিএনে
খচিত খুঁদকুড়োগুলো যত
সাপে
ও মানুষে মিলিজুলি করে
লোটে
পাখিজীবনের
রসদ অসংগত।
তেল
পিচ্ছিল পালকে লাগে না
কাদা
রোয়াকে
বসি কি বসি ভীমরুল
চাকে,
গাড়ীরাস্তায়
শহুরে মেনির পাছে
ঘোরাঘুরি
করে মরে হুলো ঝাঁকে
ঝাঁকে।
ঝাঁকের
মাগুর হতে না পারাটা
ব্যথা,
চোখে
পড়ে যায় নিগুঢ় কত
যে ভুল
বিষ্ঠা
ছড়িয়ে বংশ বাড়ানো সার
টিউলিপ
চেনে গজরানো বেংগুল।
খাঁচা
ভাঙ্গবার লোভ আর দেখাই
না তো
শেখাই
না কোনো ইউটোপিয়ান মিথ
আচঁড়ে
দেখেছি মাটি যেখানেই পাই
দাঁড়া
বেয়ে ওঠে পাঁজর কাঁপানো
শীত।
গুটিয়ে
গিয়েছি উলের বলের মত
মাথার
উপর চমকানো চাঁদ জানে
অবিশ্বাসের
পায়ের পা ঝাড়া বিষ
বপিত
যাপিত চকমকি আলিশানে।
প্রাচীন
বোঁচকা ঠোঁটে নিয়ে উঠে
পড়ি
বেপথু
নাবিক ডানায় করেছে ভর
পাখীয়াল
আয়, আয় পাখীয়াল আয়
গল্প - আজিজা নাসরিন
প্রতিশোধ
পুরানো বাড়ি ছেড়ে সবে নতুন বাড়িতে আমরা তখন এসেছি | জায়গাটা আসলে ছোট্ট মফসসল | আমাদের আগের বাড়ি ছিল এখানে থেকে দুটো গ্রাম পরে |এই মফসসলে বাবার ছোট্ট একটা ডিস্পেন্সারী আছে, আর তাছাড়া এই বাড়ি থেকে আমার কলেজ আর বুনুর স্কুল খুব কাছেই বলা যায় |নতুন বাড়িটা বেশ সুন্দর ছোটোর উপরে | দুটো বড় বড় বেডরুম | রান্নাঘর আর তার পাশেই একটা টানা বারান্দা |বারান্দা থেকে নেমেই উঠোন, উঠোনের একপাশে কলতলা আর স্নানের ঘর | আর একপাশে শৌচাগার | আমাদের পাশে একটা বাড়ি তারপর বেশ কিছুটা ফাঁকা জায়গা... তারপর মূল পাড়া শুরু হয়েছে | আসলে এখানে সবে নতুন বাড়ি শুরু হয়েছে তাই পাড়ার মাঝে মাঝে বেশ কিছু ফাকা জায়গা পড়ে আছে |বিকালে এগুলোতে বাচ্চারা খেলতে আসে |পাড়ায় সেভাবে কারো সাথে আলাপ হয়নি.... আর তাছাড়া কিছুদিন পর বুঝতে পারলাম আমাদের বাড়ির পাশের বাড়িটায় কেউ থাকে না, বাড়ির লোকজন শহরে থাকে, কালে ভদ্রে আসে এখানে | বাড়িটায় গাছপালায় ভর্তি |আমি আর বুনু যে ঘরে থাকি সেখান থেকে রাত্রিবেলায় জানালা দিয়ে বাড়িটার বারান্দা দেখা যায়, অন্ধকারে কেমন যেন আমাদের গা ছমছম করে, তবুও কেউ কাউকে কিছু বলি না | হঠাৎ করে কখনও কুকুর ডেকে উঠলে কিন্তু সত্যিই খুব ভয় লাগে |আমার বাবা সকালে ডিস্পেন্সারীতে চলে যায় সেই রাত ৯ টায় আসে |সন্ধ্যাবেলা টুকু মা রান্না ঘরে ব্যস্ত থাকে আর আমি আর বুনু বইয়ের পাতায় মুখ গুঁজে থাকি, তবুও জানালা দিয়ে বাইরে চোখ চলে যায় মাঝে মাঝে | মাকে আবার ভয়ের কথা বলাই যায় না.... মায়ের মতে এসব হল আবল তাবল সিরিয়াল দেখার ফল | এভাবেই চলছিল আমাদের দিনগুলি |তারপর এমনি এক সন্ধ্যায় আমি আর বুনু পড়তে বসেছি.... হঠাৎ দেখি বুনু দারুণ চিৎকার করে উঠল,বুনু জানালা দিয়ে হাত দেখাল.... আমি ওর হাত অনুসরন করে দেখি কেউ যেন উঠোনে সাদা শাড়ী মেলে রেখে গেছে |আমি বাকরুদ্ধ |বুনুকে নিয়ে আমি রান্নাঘরে ছুটলাম | মাকে বলতেই মা তো খুব রেগে গেলেন "কেউ হয়ত বাড়িতে এসেছে কিংবা তোমাদের বানানো গল্প" | মা আমাদের নিয়ে ঘরে এলো, আশ্চর্য্য!! শাড়ী উধাও | কিন্তু সত্যি যে আমরা দেখেছি | বাড়িটাও অন্ধকার প্রতিদিনের মত, মানুষের কোন চিহ্ন পাওয়া গেল না |আবার মায়ের কাছে বকা খেলাম |
রাত তখন ১০ টা, সবাই খেতে বসেছি একসাথে, পাশের বাড়ির উঠোনে দুম দাম শব্দ হতে লাগল |সবাই জানালায় গিয়ে দেখি... তালগাছ থেকে কিছু যেন কেউ ছুঁড়ে দিচ্ছে উঠোনে |মা সঙ্গে সঙ্গে জানালা বন্ধ করে দিলেন |আমার বাবা যথেষ্ঠ সাহসী, বাবা বললেন ব্যাপারটা বাইরে বেরিয়ে দেখে আসবেন, মা কিছুতেই যেতে দিলেন না |আর আমাদের দু বোনের অবস্থা তখন দেখার মত.... ঠক ঠক করে কাঁপছি |
তারপর আরো দুদিন গেল এভাবে, রাতে আমরা মায়ের সাথে ঘুমাই এখন, ভয়ে সিঁটিতেই থাকি |তারপর বাবা আমাদের সবথেকে কাছের এক প্রতিবেশীর বাড়ি গিয়ে ব্যাপারটা জানান |তারপর তাদের কাছে যা শুনলাম অবাক হওয়ার মত |
পাড়ায় ব্যানার্জী বাড়ির লোকেরায় সবথেকে পুরাতন এ পাড়ায় |ব্যানার্জী দাদু বয়:জেষ্ঠ লোক, তাঁর স্ত্রী, দুই ছেলে এবং তাদের দুই বউ আর নাতি নাতনি নিয়ে সংসার |এই বাড়ির লোকেদের অদভুত স্বভাব হল অন্যকে অযথা ভয় দেখিয়ে, অথবা ঠকিয়ে তাঁরা খুব মজা পান |পাড়ায় প্রায় সবার সাথেই এমন কিছু না কিছু করেইছেন | এই শুনে আমরা বিস্ময়ে হতবাক |সুতরাং এই দাঁড়াল যে তাঁরাই আমাদের ভয় দেখিয়েছেন এতদিন | পৃথিবীতে মানুষের চারিত্র্যিক এ হেন বৈশিষ্ট্যও যে থাকতে পারে তা আমার কল্পনার বাইরে ছিল |
যাইহোক আমার বাবা এ ব্যাপারে তাঁদের সাথে কথা বলতে যান এবং তাঁরা স্বীকারও করেন | ব্যানার্জী দাদু বরং এক চোট হেসে নিয়ে বললেন " হা হা হা, তা কেমন ভয় পেলে বলো "? আমার বাবা যথেষ্ঠ অসন্তুষ্ট হয়েছিলেন, বললেন " বাড়িতে ছোট ছোট মেয়ে নিয়ে থাকি, ওরা তো ভীষণ ভয় পেয়েছে, এভাবে ভয় দেখানো কি উচিত হল বলুন? "
-আরে বাবা, ভয়ের কি আছে? তাছাড়া ভূত বলে কি কিছু আছে নাকি?
..........বাবা কিছুক্ষণ পর বললেন "অবশ্যই আছে, আপনি বিশ্বাস করেননা?
ব্যানার্জী দাদু ভীষণ অবাক হলেন |এরকম উত্তর তিনি আশা করেননি | বললেন" সে কি হে, এই সভ্যতা তে এসেও ভূতের অস্তত্বে বিশ্বাস করো? হা হা হা "
-অবশ্যই,
-তা বিশ্বাস টা কি শুধুই বিশ্বাস নাকি কোন প্রমাণ আছে?
বেশ তাচ্ছিল্যের স্বরেই বললেন কথাটা,
-হুম আমি যদি আপনাকে ভূত দেখাতে পারি, তবে কি বিশ্বাস করবেন?
দাদু হকচকিয়ে গেলেন, বললেন "তাই নাকি, আচ্ছা কবে?
-পরের অমাবস্যায় |আমারদের বাড়িতে |
আমার বাবা যে ভূত দেখাতে ওস্তাদ তা আমাদের কস্মিনকালেও জানা ছিল না | সেদিন অমাবস্যার রাতে যথারীতি ওই দাদু তার ছেলে বউ নিয়ে হাজির আর হাজির গ্রামের কিছু উৎসুক লোকজন | আমরা অনেকেই ছোটরা ছিলাম, তারা তো মনে মনে ভীষণ ভয় পাচ্ছি, কিন্তু ব্যপারটা চাক্ষুষ দেখার লোভও সামলাতে পারছি না | যদি বাবা মা জানতে পারে আমরা ভয় পেয়েছি তাহলেই অন্য কোথাও আমাদের সরিয়ে দেবে | মায়ের আঁচল চেপে বসে আছি আমরা দুইবোন | মাও আমাদের মতই সমান উৎকন্ঠা নিয়ে অপেক্ষা করছে | রাত ১০ টা বাজল ঘড়িতে | আমার বাবা দাদুদের ফ্যামিলির সবাইকে একটা ঘরে ডাকলেন তার সাথে কিছু অন্য লোকও গেল যারা ভূত দেখতে ইচ্ছুক | ঘরের মাঝে একটা মোমবাতি জ্বলছে,বাবা সবাইকে ডেকে একটা করে লাইন করে বসিয়ে দিলেন | তারপর হাতে একটা ছোট্ট মাটির পাত্র | বাবা এবার মোমবাতি টা নিবিয়ে দিলেন, তারপর সবার হাতে হাতে গঙ্গাজল দিয়ে বললেন সেটা হাতে মুখে ভালো করে মেখে নিতে, পরে কিছুক্ষণ সংস্কৃত কিছু শ্লোক আউড়ে নিয়ে জানালা টা একটু ফাঁক করে ঘরের কোণে রাখা বড় আয়নায়ার সামনে মোমবাতি টা জ্বালালেন |তারপর একে একে সবাইকে আয়নার সামনে এসে ভূত দর্শন করতে বললেন | আমরা সবাই ঘরের বাইরে দাঁড়িয়ে ঘামছি, হৃৎপিন্ডের দ্রুত কার্যকারিতা সবকিছু যেন একে অপরের টা শুনতে পাচ্ছি | এবার ভিতরে একে একে সবাই আয়নার সামনে যাচ্ছে আর চিৎকার করে উঠছে..... না ভূত দেখে নয়, নিজের মুখ দেখে | দাদুর বাড়ির সবাইকে আমার বাবা গঙ্গাজল এর বদলে দিয়েছিলেন আলতা, এটা যে আমার আর বোনের সবুজ ঝুড়িটা থেকে চুরি করা সে বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই, আর বাকি দের কপালে গঙ্গাজল নয় আমাদের কলের জল জুটেছিল | তাদের সবার লালমুখ কিছুটা স্তম্ভিত, অবাক আর কিছুটা লজ্জ্বিতও বোধহয় হয়েছিল | পাড়ার লোকের মুখে মিটি মিটি হাসি, দাদু শুধু বলেছিলেন "এই ভাবে ঠকালে হে?" বাবার মুখে নির্লজ্জ্বের হাসি | যাক গে, তারপর তাঁরা অনেকদিন আমাদের এড়িয়ে চলেছিলেন, পরে আবার স্বাভাবিক হয়ে যান অবশ্য, তবে পাড়ায় আসা নতুনদের কাউকে আর ভয় বা ঠাট্টা তামাশা করার সাহস দেখাননি |
পুরানো বাড়ি ছেড়ে সবে নতুন বাড়িতে আমরা তখন এসেছি | জায়গাটা আসলে ছোট্ট মফসসল | আমাদের আগের বাড়ি ছিল এখানে থেকে দুটো গ্রাম পরে |এই মফসসলে বাবার ছোট্ট একটা ডিস্পেন্সারী আছে, আর তাছাড়া এই বাড়ি থেকে আমার কলেজ আর বুনুর স্কুল খুব কাছেই বলা যায় |নতুন বাড়িটা বেশ সুন্দর ছোটোর উপরে | দুটো বড় বড় বেডরুম | রান্নাঘর আর তার পাশেই একটা টানা বারান্দা |বারান্দা থেকে নেমেই উঠোন, উঠোনের একপাশে কলতলা আর স্নানের ঘর | আর একপাশে শৌচাগার | আমাদের পাশে একটা বাড়ি তারপর বেশ কিছুটা ফাঁকা জায়গা... তারপর মূল পাড়া শুরু হয়েছে | আসলে এখানে সবে নতুন বাড়ি শুরু হয়েছে তাই পাড়ার মাঝে মাঝে বেশ কিছু ফাকা জায়গা পড়ে আছে |বিকালে এগুলোতে বাচ্চারা খেলতে আসে |পাড়ায় সেভাবে কারো সাথে আলাপ হয়নি.... আর তাছাড়া কিছুদিন পর বুঝতে পারলাম আমাদের বাড়ির পাশের বাড়িটায় কেউ থাকে না, বাড়ির লোকজন শহরে থাকে, কালে ভদ্রে আসে এখানে | বাড়িটায় গাছপালায় ভর্তি |আমি আর বুনু যে ঘরে থাকি সেখান থেকে রাত্রিবেলায় জানালা দিয়ে বাড়িটার বারান্দা দেখা যায়, অন্ধকারে কেমন যেন আমাদের গা ছমছম করে, তবুও কেউ কাউকে কিছু বলি না | হঠাৎ করে কখনও কুকুর ডেকে উঠলে কিন্তু সত্যিই খুব ভয় লাগে |আমার বাবা সকালে ডিস্পেন্সারীতে চলে যায় সেই রাত ৯ টায় আসে |সন্ধ্যাবেলা টুকু মা রান্না ঘরে ব্যস্ত থাকে আর আমি আর বুনু বইয়ের পাতায় মুখ গুঁজে থাকি, তবুও জানালা দিয়ে বাইরে চোখ চলে যায় মাঝে মাঝে | মাকে আবার ভয়ের কথা বলাই যায় না.... মায়ের মতে এসব হল আবল তাবল সিরিয়াল দেখার ফল | এভাবেই চলছিল আমাদের দিনগুলি |তারপর এমনি এক সন্ধ্যায় আমি আর বুনু পড়তে বসেছি.... হঠাৎ দেখি বুনু দারুণ চিৎকার করে উঠল,বুনু জানালা দিয়ে হাত দেখাল.... আমি ওর হাত অনুসরন করে দেখি কেউ যেন উঠোনে সাদা শাড়ী মেলে রেখে গেছে |আমি বাকরুদ্ধ |বুনুকে নিয়ে আমি রান্নাঘরে ছুটলাম | মাকে বলতেই মা তো খুব রেগে গেলেন "কেউ হয়ত বাড়িতে এসেছে কিংবা তোমাদের বানানো গল্প" | মা আমাদের নিয়ে ঘরে এলো, আশ্চর্য্য!! শাড়ী উধাও | কিন্তু সত্যি যে আমরা দেখেছি | বাড়িটাও অন্ধকার প্রতিদিনের মত, মানুষের কোন চিহ্ন পাওয়া গেল না |আবার মায়ের কাছে বকা খেলাম |
রাত তখন ১০ টা, সবাই খেতে বসেছি একসাথে, পাশের বাড়ির উঠোনে দুম দাম শব্দ হতে লাগল |সবাই জানালায় গিয়ে দেখি... তালগাছ থেকে কিছু যেন কেউ ছুঁড়ে দিচ্ছে উঠোনে |মা সঙ্গে সঙ্গে জানালা বন্ধ করে দিলেন |আমার বাবা যথেষ্ঠ সাহসী, বাবা বললেন ব্যাপারটা বাইরে বেরিয়ে দেখে আসবেন, মা কিছুতেই যেতে দিলেন না |আর আমাদের দু বোনের অবস্থা তখন দেখার মত.... ঠক ঠক করে কাঁপছি |
তারপর আরো দুদিন গেল এভাবে, রাতে আমরা মায়ের সাথে ঘুমাই এখন, ভয়ে সিঁটিতেই থাকি |তারপর বাবা আমাদের সবথেকে কাছের এক প্রতিবেশীর বাড়ি গিয়ে ব্যাপারটা জানান |তারপর তাদের কাছে যা শুনলাম অবাক হওয়ার মত |
পাড়ায় ব্যানার্জী বাড়ির লোকেরায় সবথেকে পুরাতন এ পাড়ায় |ব্যানার্জী দাদু বয়:জেষ্ঠ লোক, তাঁর স্ত্রী, দুই ছেলে এবং তাদের দুই বউ আর নাতি নাতনি নিয়ে সংসার |এই বাড়ির লোকেদের অদভুত স্বভাব হল অন্যকে অযথা ভয় দেখিয়ে, অথবা ঠকিয়ে তাঁরা খুব মজা পান |পাড়ায় প্রায় সবার সাথেই এমন কিছু না কিছু করেইছেন | এই শুনে আমরা বিস্ময়ে হতবাক |সুতরাং এই দাঁড়াল যে তাঁরাই আমাদের ভয় দেখিয়েছেন এতদিন | পৃথিবীতে মানুষের চারিত্র্যিক এ হেন বৈশিষ্ট্যও যে থাকতে পারে তা আমার কল্পনার বাইরে ছিল |
যাইহোক আমার বাবা এ ব্যাপারে তাঁদের সাথে কথা বলতে যান এবং তাঁরা স্বীকারও করেন | ব্যানার্জী দাদু বরং এক চোট হেসে নিয়ে বললেন " হা হা হা, তা কেমন ভয় পেলে বলো "? আমার বাবা যথেষ্ঠ অসন্তুষ্ট হয়েছিলেন, বললেন " বাড়িতে ছোট ছোট মেয়ে নিয়ে থাকি, ওরা তো ভীষণ ভয় পেয়েছে, এভাবে ভয় দেখানো কি উচিত হল বলুন? "
-আরে বাবা, ভয়ের কি আছে? তাছাড়া ভূত বলে কি কিছু আছে নাকি?
..........বাবা কিছুক্ষণ পর বললেন "অবশ্যই আছে, আপনি বিশ্বাস করেননা?
ব্যানার্জী দাদু ভীষণ অবাক হলেন |এরকম উত্তর তিনি আশা করেননি | বললেন" সে কি হে, এই সভ্যতা তে এসেও ভূতের অস্তত্বে বিশ্বাস করো? হা হা হা "
-অবশ্যই,
-তা বিশ্বাস টা কি শুধুই বিশ্বাস নাকি কোন প্রমাণ আছে?
বেশ তাচ্ছিল্যের স্বরেই বললেন কথাটা,
-হুম আমি যদি আপনাকে ভূত দেখাতে পারি, তবে কি বিশ্বাস করবেন?
দাদু হকচকিয়ে গেলেন, বললেন "তাই নাকি, আচ্ছা কবে?
-পরের অমাবস্যায় |আমারদের বাড়িতে |
আমার বাবা যে ভূত দেখাতে ওস্তাদ তা আমাদের কস্মিনকালেও জানা ছিল না | সেদিন অমাবস্যার রাতে যথারীতি ওই দাদু তার ছেলে বউ নিয়ে হাজির আর হাজির গ্রামের কিছু উৎসুক লোকজন | আমরা অনেকেই ছোটরা ছিলাম, তারা তো মনে মনে ভীষণ ভয় পাচ্ছি, কিন্তু ব্যপারটা চাক্ষুষ দেখার লোভও সামলাতে পারছি না | যদি বাবা মা জানতে পারে আমরা ভয় পেয়েছি তাহলেই অন্য কোথাও আমাদের সরিয়ে দেবে | মায়ের আঁচল চেপে বসে আছি আমরা দুইবোন | মাও আমাদের মতই সমান উৎকন্ঠা নিয়ে অপেক্ষা করছে | রাত ১০ টা বাজল ঘড়িতে | আমার বাবা দাদুদের ফ্যামিলির সবাইকে একটা ঘরে ডাকলেন তার সাথে কিছু অন্য লোকও গেল যারা ভূত দেখতে ইচ্ছুক | ঘরের মাঝে একটা মোমবাতি জ্বলছে,বাবা সবাইকে ডেকে একটা করে লাইন করে বসিয়ে দিলেন | তারপর হাতে একটা ছোট্ট মাটির পাত্র | বাবা এবার মোমবাতি টা নিবিয়ে দিলেন, তারপর সবার হাতে হাতে গঙ্গাজল দিয়ে বললেন সেটা হাতে মুখে ভালো করে মেখে নিতে, পরে কিছুক্ষণ সংস্কৃত কিছু শ্লোক আউড়ে নিয়ে জানালা টা একটু ফাঁক করে ঘরের কোণে রাখা বড় আয়নায়ার সামনে মোমবাতি টা জ্বালালেন |তারপর একে একে সবাইকে আয়নার সামনে এসে ভূত দর্শন করতে বললেন | আমরা সবাই ঘরের বাইরে দাঁড়িয়ে ঘামছি, হৃৎপিন্ডের দ্রুত কার্যকারিতা সবকিছু যেন একে অপরের টা শুনতে পাচ্ছি | এবার ভিতরে একে একে সবাই আয়নার সামনে যাচ্ছে আর চিৎকার করে উঠছে..... না ভূত দেখে নয়, নিজের মুখ দেখে | দাদুর বাড়ির সবাইকে আমার বাবা গঙ্গাজল এর বদলে দিয়েছিলেন আলতা, এটা যে আমার আর বোনের সবুজ ঝুড়িটা থেকে চুরি করা সে বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই, আর বাকি দের কপালে গঙ্গাজল নয় আমাদের কলের জল জুটেছিল | তাদের সবার লালমুখ কিছুটা স্তম্ভিত, অবাক আর কিছুটা লজ্জ্বিতও বোধহয় হয়েছিল | পাড়ার লোকের মুখে মিটি মিটি হাসি, দাদু শুধু বলেছিলেন "এই ভাবে ঠকালে হে?" বাবার মুখে নির্লজ্জ্বের হাসি | যাক গে, তারপর তাঁরা অনেকদিন আমাদের এড়িয়ে চলেছিলেন, পরে আবার স্বাভাবিক হয়ে যান অবশ্য, তবে পাড়ায় আসা নতুনদের কাউকে আর ভয় বা ঠাট্টা তামাশা করার সাহস দেখাননি |
রবীন বসু
শেষ
চাল
নিঃসঙ্গ
প্ল্যাটফর্ম, শব্দহীন স্টেশনে
ধাবমান
ট্রেন চলে গেছে আগে,
কিছু
স্মৃতিচিহ্ন গোড় দেয় সেখানে
যেখানে
বিষণ্ণতা হাঁটে আগেভাগে l
ধূসর
ছায়ার মত বৃষ্টি নামে
কাছে দূরে
সময়
দাঁড়িয়েছে ঠায়, বিকেলের মেঘে
আচমকা
গান লাগে ফেলে আসা
সুরে,
তবুও
জীবন এসে হাত ধরে
সেধে সেধে l
প্রাপ্তি
বা অপ্রাপ্তি যত জড়ো করা
খামে
তারও
মাঝে বীজ বোনা, ফসলের
আশা,
চাষীরও
কপাললেখা বিন্দু বিন্দু ঘামে
ধুয়ে
গেলে সেও দেবে শেষ
চাল দান পাশা l
বিশ্বজিৎ
প্রাপ্তি
প্রতিদিন
একটা ছবির মৃত্যু ঘটছে।
প্রতিদিন
আরও নতুন পরিচর্যা।
স্বপ্ন
গোছাতে গোছাতে
আরও
অজান্তে,
পরিণত
হয়ে উঠছে
জমানো
চিৎকার…
সংস্কৃতি ব্যানার্জী
অন্ধকার
বন্ধ
ঘরের ভিতর
উত্তর
খুঁজেছ,দিন পেরিয়েছে
যে
ক্ষতে নদী বয়ে যেত
আজ
নিষিদ্ধ।
দমবদ্ধ
ছায়ার কথা
তুমি
জিতে গেছ।
আমিও
জিতেছি
তবুও
পথভরতি অন্ধকার…
ফারুক আহমেদ
মূল্যবান দীপ্তিময় তারার জন্য
মূল্যবান দীপ্তিময় তারা
এই হৃদয়ে তাজা লালগোলাপ চিরন্তন।
তোমার জন্য বন্য হই,
ধন্য হই।
এ মনে আগুন জ্বলে
এ চোখে অশ্রু ঝরে ঝরুক,
এ পাঁজরে প্রেম ভালবাসা,
কন্ঠে বাজে গান--
সব তোমার জন্য
প্রিয় দুখিনী বাংলা মা আমার।
প্রাণের বাংলা ভাষাতেই জানাই
ভালবাসি তোমায়
মূল্যবান দীপ্তিময় তারা।
সালাম বরকত রফিক আজাদ
আরও কত দীপ্তময় প্রাণ
জ্যোতির্ময় তারা
হল বলিদান--
বাংলার সোনার ছেলেরা।
একুশে ফেব্রুয়ারী উনিশে মে
বাংলা ভাষায় গেয়ে ওঠে পাখি
প্রভাত ফেরির গান।
মূল্যবান দীপ্তিময় তারা
আমার বাংলা মায়ের অনন্যা
তোমার মায়াবী চোখ
ভুবন জয়ের হাসি-কান্নায়
ভেজা চিবুক।
বাংলা-ভাষা কবির ভাষা,
আমার ভাষা, তোমার ভাষা,
বাংলা আমার মায়ের ভাষা,
বাংলা আমার মুখের ভাষা,
বাংলা আমার মাটির ভাষা,
বাংলা আমার প্রিয়ার ভাষা,
বাংলা দীপ্তময়ের প্রিয় ভাষা,
একদিন
এই মাটিতে হই যেন বিলীন।
আকাশের দিকে তাকাই
কালো ধোঁয়ায় ঢাকা আকাশ
সূর্য দেখা যায় না
চারিদিকে তাকাই শুধুই আধাঁর
মূল্যবান দীপ্তিময় তারা
চোখ ফেরাই মাটির দিকে
রক্তে লাল মায়ের বুক।
আকাশের বুক চিরে
নতুন সূর্য উঠুক আর
বজ্র-গর্ভ মেঘ থেকে
সম্প্রীতির বার্তা নিয়ে
ঝরঝরিয়ে বৃষ্টি নামুক
রক্তের দাগ মুছে যাক।
আমার বাংলা-ভাষার দেশ
আমার দোয়েল-পাখির দেশ
আমার সোনার বাংলা-দেশ
এপারে বাংলা ওপারে বাংলা
একটাই স্বদেশ।
তারের বেড়া ছিঁড়ে দাও ভেঙ্গে দাও হোক একটাই স্বদেশ।
পৃথিবী আমার স্বদেশ আমার
পৃথিবী আমার দেশ।
তারার-আকাশ আমার আকাশ
দীপ্তিময় তারার দেশ।
মূল্যবান দীপ্তিময় তারা
এই হৃদয়ে তাজা লালগোলাপ চিরন্তন।
তোমার জন্য বন্য হই,
ধন্য হই।
এ মনে আগুন জ্বলে
এ চোখে অশ্রু ঝরে ঝরুক,
এ পাঁজরে প্রেম ভালবাসা,
কন্ঠে বাজে গান--
সব তোমার জন্য
প্রিয় দুখিনী বাংলা মা আমার।
প্রাণের বাংলা ভাষাতেই জানাই
ভালবাসি তোমায়
মূল্যবান দীপ্তিময় তারা।
সালাম বরকত রফিক আজাদ
আরও কত দীপ্তময় প্রাণ
জ্যোতির্ময় তারা
হল বলিদান--
বাংলার সোনার ছেলেরা।
একুশে ফেব্রুয়ারী উনিশে মে
বাংলা ভাষায় গেয়ে ওঠে পাখি
প্রভাত ফেরির গান।
মূল্যবান দীপ্তিময় তারা
আমার বাংলা মায়ের অনন্যা
তোমার মায়াবী চোখ
ভুবন জয়ের হাসি-কান্নায়
ভেজা চিবুক।
বাংলা-ভাষা কবির ভাষা,
আমার ভাষা, তোমার ভাষা,
বাংলা আমার মায়ের ভাষা,
বাংলা আমার মুখের ভাষা,
বাংলা আমার মাটির ভাষা,
বাংলা আমার প্রিয়ার ভাষা,
বাংলা দীপ্তময়ের প্রিয় ভাষা,
একদিন
এই মাটিতে হই যেন বিলীন।
আকাশের দিকে তাকাই
কালো ধোঁয়ায় ঢাকা আকাশ
সূর্য দেখা যায় না
চারিদিকে তাকাই শুধুই আধাঁর
মূল্যবান দীপ্তিময় তারা
চোখ ফেরাই মাটির দিকে
রক্তে লাল মায়ের বুক।
আকাশের বুক চিরে
নতুন সূর্য উঠুক আর
বজ্র-গর্ভ মেঘ থেকে
সম্প্রীতির বার্তা নিয়ে
ঝরঝরিয়ে বৃষ্টি নামুক
রক্তের দাগ মুছে যাক।
আমার বাংলা-ভাষার দেশ
আমার দোয়েল-পাখির দেশ
আমার সোনার বাংলা-দেশ
এপারে বাংলা ওপারে বাংলা
একটাই স্বদেশ।
তারের বেড়া ছিঁড়ে দাও ভেঙ্গে দাও হোক একটাই স্বদেশ।
পৃথিবী আমার স্বদেশ আমার
পৃথিবী আমার দেশ।
তারার-আকাশ আমার আকাশ
দীপ্তিময় তারার দেশ।
মেধস ঋষি বন্দ্যোপাধ্যায়
কল্পনাপুর
আর নয় এ শহরে চলো যাই দূরে
যেখানে রাখাল বাঁশি বাজে মিঠে সুরে।
বাতাসে যেখানে নেই মোটে ধুলোবালি
যেখানে আকাশে কেউ মাখায়নি কালি।
গাছগাছালিতে ভরা জায়গাটা খাসা
ডালে ডালে দেখা যায় পাখিদের বাসা।
যেখানে মানুষ দুটো কথা বলে হেসে
রাগ অভিমান ভুলে যায় ভালোবেসে।
এইবার থেমে নাতি বলে দুচ্ছাই!
এরকম জায়গা কি খুঁজে পাওয়া যায়?
দাদু বলে আছে আছে, নয় মোটে দূর,
চোখ বুজে দেখ পাবে কল্পনাপুর।
আর নয় এ শহরে চলো যাই দূরে
যেখানে রাখাল বাঁশি বাজে মিঠে সুরে।
বাতাসে যেখানে নেই মোটে ধুলোবালি
যেখানে আকাশে কেউ মাখায়নি কালি।
গাছগাছালিতে ভরা জায়গাটা খাসা
ডালে ডালে দেখা যায় পাখিদের বাসা।
যেখানে মানুষ দুটো কথা বলে হেসে
রাগ অভিমান ভুলে যায় ভালোবেসে।
এইবার থেমে নাতি বলে দুচ্ছাই!
এরকম জায়গা কি খুঁজে পাওয়া যায়?
দাদু বলে আছে আছে, নয় মোটে দূর,
চোখ বুজে দেখ পাবে কল্পনাপুর।
গার্গী মুখার্জী
দুর্গা পুজো
পুজো মানে শরৎ হওয়ার উন্মাদনা প্রাণে
পুজো মানে দেদার মজা আড্ডা নাচে গানে।
প্রাণের খেলায় মত্ত সবাই বন্ধু সজন মিলে
শিশুরা সব লাগম ছাড়া বাধা নিষেধ ঢিলে।
আনন্দে সব মাতোয়ারা মণ্ডপে নাই ঠাঁই
ছেলমেয়েরা এটা, ওটা ,করছে খাই খাই।
পুজো মানে বছর ভোরের সুখের ছোঁয়া মনে
নতুন পোশাক,নতুন জুতো খুশি টগবগ প্রাণে।
ধুনুচি নাচ, সিঁদুর খেলায় বাঙালিরা ঘুমহারা
বিজয়াতেই পুজোর খুশি এবারের মত সারা।
সারাবছর অপেক্ষা তে বাঙালির বড় সুখ
আসছে বছর আবার হবে আশায় বাঁধে বুক।
পুজো মানে শরৎ হওয়ার উন্মাদনা প্রাণে
পুজো মানে দেদার মজা আড্ডা নাচে গানে।
প্রাণের খেলায় মত্ত সবাই বন্ধু সজন মিলে
শিশুরা সব লাগম ছাড়া বাধা নিষেধ ঢিলে।
আনন্দে সব মাতোয়ারা মণ্ডপে নাই ঠাঁই
ছেলমেয়েরা এটা, ওটা ,করছে খাই খাই।
পুজো মানে বছর ভোরের সুখের ছোঁয়া মনে
নতুন পোশাক,নতুন জুতো খুশি টগবগ প্রাণে।
ধুনুচি নাচ, সিঁদুর খেলায় বাঙালিরা ঘুমহারা
বিজয়াতেই পুজোর খুশি এবারের মত সারা।
সারাবছর অপেক্ষা তে বাঙালির বড় সুখ
আসছে বছর আবার হবে আশায় বাঁধে বুক।
কণিকা সরকার
একটুকু নীল দিলে
স্লেটের থেকে মুখটা তুলে
দেখেই আকাশটাকে
চমকে উঠে তিন্নি সোনা
আনল ডেকে মাকে।
বলল - মাকে ওই জমিটায়
নীল দিল কে ঢেলে?
আঁকতে আঁকতে লোকটা কি মা
রং দিয়েছে দিয়েছে ফেলে?
তুলোর চাদর টেনে দ্যাখো
মুছছে আবার নীল!
স্লেট মোছা এই তুলোর সাথে ওটার বড্ড মিল।
মা, বলো না, এত নীল সে
কোথায় কখন পেলে?
খুব ক্ষতি কি হবে মা, ওর
আমায় একটু দিলে!
স্লেটের থেকে মুখটা তুলে
দেখেই আকাশটাকে
চমকে উঠে তিন্নি সোনা
আনল ডেকে মাকে।
বলল - মাকে ওই জমিটায়
নীল দিল কে ঢেলে?
আঁকতে আঁকতে লোকটা কি মা
রং দিয়েছে দিয়েছে ফেলে?
তুলোর চাদর টেনে দ্যাখো
মুছছে আবার নীল!
স্লেট মোছা এই তুলোর সাথে ওটার বড্ড মিল।
মা, বলো না, এত নীল সে
কোথায় কখন পেলে?
খুব ক্ষতি কি হবে মা, ওর
আমায় একটু দিলে!
নুরজামান শাহ
রোদের মাখামাখি
গাছের পাতায় রোদগুলো সব কাটছে আঁকাবুকি,
উঠোন জুড়ে দু - একটি রোদ দিচ্ছে এসে উঁকি।
হলুদ পাখি গাছের ডালে সোনার বরণ গা-য়...
রোদ মাখে আর খিদের চোটে পাকুড়দানা খায়।
আমার বাড়ি নিঝুম ভীষণ সরোবরের কাছে,
গাছপালাতে চারিপাশ তার ঘেরাটোপে আছে।
সোনার হরিণ নিত্য দেখি করছে আনাগোনা,
রঙ ছড়ানো রোদ গায়ে তার লাগছে যেন সোনা।
পথ হারানো স্বপ্ন দেখা সেই ছেলেটার মন,
আজও তাকে ডাকছে কাছে ইচ্ছেপলাশ বন।
ইচ্ছে আবার দূর আকাশের রোদের মাখামাখি ,
পরশ পেতে তাই সে খোঁজে ইচ্ছেডানার পাখি।
গাছের পাতায় রোদগুলো সব কাটছে আঁকাবুকি,
উঠোন জুড়ে দু - একটি রোদ দিচ্ছে এসে উঁকি।
হলুদ পাখি গাছের ডালে সোনার বরণ গা-য়...
রোদ মাখে আর খিদের চোটে পাকুড়দানা খায়।
আমার বাড়ি নিঝুম ভীষণ সরোবরের কাছে,
গাছপালাতে চারিপাশ তার ঘেরাটোপে আছে।
সোনার হরিণ নিত্য দেখি করছে আনাগোনা,
রঙ ছড়ানো রোদ গায়ে তার লাগছে যেন সোনা।
পথ হারানো স্বপ্ন দেখা সেই ছেলেটার মন,
আজও তাকে ডাকছে কাছে ইচ্ছেপলাশ বন।
ইচ্ছে আবার দূর আকাশের রোদের মাখামাখি ,
পরশ পেতে তাই সে খোঁজে ইচ্ছেডানার পাখি।
ঈশিকা কুন্ডু
কৃষ্ণেন্দুর
প্রতি
আমাদের
দূরত্বখানি ভীষণ আপাত
এই
পৃথিবীর যা কিছু সত্যিকারের
সত্যি তাদের মধ্যে
তোমার-আমার অবিচ্ছেদ মাথা
উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকে
এই
পৃথিবীর যা কিছু সত্যিকারের
মিথ্যে তাদের মধ্যে
তোমার
চলে যাওয়ার স্পষ্ট পদচিন্হ
এ যেন অতীতের অতল
বালিতে বিছিয়ে রাখা নকল
জেলিফিস
ফিরে
এসো কৃষ্ণেন্দু
আপোষে
নয়
তাচ্ছিল্যে
নয়
গভীর
টানে ফিরে এসো
আমি
ভালো নেই
আমার
ভালো থাকা সমেত ফিরে
এসো
চতুর
সংশয় ছুঁড়ে দাও আমার
বুকে ,"ভালোবাসবে নাকি মরে যাবো?"
পাগলাটে
হয়ে ফিরে এসো
মানুষগুলোকে
জানিয়ে দাও তুমি কেবল
আমাকে ভালোবাসো
মাতাল
হয়েও তুমি ভুলে থাকতে
পারোনি আমার করুন মুখ
আমার
আঙুলে তোমার প্রাণ ঘুমিয়ে
থাকে
দ্বিধাহীন
হয়ে বলো,"সংসার বাঁধব"
রঙিন
পাখনাওয়ালা শবর-শবরীর মতো
প্রেমে পড়ব আবার
আমার
বেঁচে থাকা টুকু সমেত
তোমাকে ফিরতেই হবে,কৃষ্ণেন্দু
আমরা
ভালো মতো ভালোবাসা-বাসি
করবো....
কৌশিক গাঙ্গুলি
কালিকাপ্রসাদ
বাবরি
চুল মাথা নাড়ে
মনমাতানো
মাটির সুরে ,
গান
গাইছেন কালিকাপ্রসাদ ।
তত্ত্বকথা
সহজভাবে
বাউল
যেন হাবেভাবে
করছে
মনে প্রেম আবাদ ।
দোহার
বা একক গানে
বাজনা
বাজান আপনমনে
ভালবাসায়
সে এক প্রবাদ ।
কালো
রাতের নিশির ঘোরে
প্রান
হারালো ঘুমঘোরে ,
সবার
প্রিয় কালিকাপ্রসাদ ।
কথায়
কথায় লোকগানে
মানুষ
ভাসতো মনের টানে ,
স্বপ্নে
আসে , স্মৃতির কোঠায়
মনের
মানুষ শুধু কেঁদে যায়
কোথায়
গেলে কালিকাপ্রসাদ ?
ভাবন
মানুষ গানে , কথায়
তাকে
শুধু মনে করে যায়
,
অঘটনে
যে সব বরবাদ ।
বাবরি
চুল মাথা নাড়ে
মন
মাতানো মাটির সুরে
গান
গাইতেন কালিকাপ্রসাদ ।
সুদীপ ঘোষাল
আকাশমালা
আয়না
প্রতিবিম্ব দেখায় যুগান্তকারী আবর্তে
ধুলোফাগ
মেখে হাঁটুতে গোটানো প্যান্ট
লাল
নাগরিক চিতায় বাঁধে নোঙর
এ নিয়ম জঞ্জাল সরিয়ে
আবর্তিত ক্লান্ত কান্নার কবর
লুব্ধক
শুকতারা পাহারাদার ,হ্যামারশিয়া ওথেলো সপ্তপর্ণীর আকর্ষণে
দিশেহারা
ভালোমন্দের
ঘেরাটোপ ছাড়িয়ে শতাব্দী জুড়ে মেঘেদের আনাগোনা
সৌজন্য বাতাসজুড়ে...
এসো
আজ এমন দিনে শুধু
মানুষের পরিচয়ে
বার্ষিক
গতির মত নিয়ম মেনে
ভালোবাসার আকাশমালায় নত হই...
মানবেন্দ্র ব্যানার্জী
আগমনী
নিকিয়ে
আকাশ নিকিয়ে উঠোন
নিকিয়ে
দিয়ে পাড়া
বর্ষার
যতো কালো মেঘের
এখন
হাত পা ঝাড়া
কাজ
নেই তো খই
ভেজে যায়
নীল
গগনের নীচে
ধবল
পোশাক পরে তারা
ছুটছে
রোদের পিছে।
রোদ
নয়তো সোনাঝুরির
কানের
ঝুমকো দুল
সোহাগ
ভরে জড়িয়ে ধরে
ভোরের
শিউলি ফুল।
নদীর
চরে জমির আলে
কাশ
ফুলেদের মেলা
আলতো
হাওয়ার খুনসুটিতে
করছে
তারা খেলা।
শালুক
শালুক হাসে সকাল
কাজলা
দিঘির জলে
কাট
পোকারা অ আ লেখে
নেহাত
খেলার ছলে।
ঘোলা
জলের নদী যতো
শরৎ
করে শোধন
আগমনির
সুর উঠেছে
হবে
পুজোর বোধন।
বোষ্টুমি
এক গান ধরেছে
কোমল
মধুর সুরে
পুজোর
গন্ধ ভেসে বেড়ায়
সোনালী
রোদ্দুরে।
পাড়ার
যতো কচিকাঁচা
ফেলে
দিয়ে পড়া
সারা
দুপুর পুজো তলায়
দেখছে
ঠাকুর গড়া।
এতে সদস্যতা:
পোস্টগুলি (Atom)