০২ সেপ্টেম্বর ২০১৬
তৈমুর খান
মহাকাল পেরোতে থাকে
জল খেতে আসে অবহেলার হ্রদে
আমাদের ক্ষয়িষ্ণু বংশধরেরা
দূর থেকে দেখি তাদের ঘিরে থাকে
ইতিহাসের প্রাচীন আত্মারা
ছায়ারা হামাগুড়ি দিয়ে নামে
তাদের হাত পা মাথা কিছু নেই
জলীয় বলের মতো ঘোরে
অসংকোচে ঝরে পড়ে দৈবের গান
পাখিদের ভিড় কমে গেলে
একটি নষ্ট সভ্যতা চুপচাপ জেগে থাকে
মনুষ্যত্বহীন গন্তব্য তখন রাষ্ট্র নির্মাণ করে চলে
সেই ভয়ংকর রাষ্ট্র কোনো ঘুমের ব্যবস্থাও করে না
অবেলায় আঁচল পেতে দেয় শীতের সূর্য
মেঘের মহিমায় আটকে থাকে চাঁদের কলা
ইচ্ছারা ভাসমান নৌকা হয়ে চলে যা
মহাকাল পেরোতে থাকে কাঙাল আয়ুরেখা
কবিরুল ইসলাম কঙ্ক
ডাউনলোড ফাইলে যা লেখা ছিল
এইবেলাতে
যে কথারা উপচে পড়ে
হৃদয়
মুড়ে মিটিয়ে দিলেম সমস্ত দায়,
এখনো
সেই ঘোগের বাসা বাঘের ঘরে
কলুঘানির
জীবনখানি চুপসানো প্রায় ।
না মরা
সব যন্ত্রণারা বিষিয়ে ওঠে
ছুটছে
জোরে বল্গাহীন রেসের ঘোড়া,
অন্য
মনে ফুটছে যত রাঙা বকুল
শ্লোগান
গাওয়া বেহায়াদের কপালপোড়া ।
দারুণ
হবে মোকাবিলা এবার তবে
দুই
সেয়ানের কোলাকুলি উঠবে জমে,
সাপলুডোর
মারপ্যাঁচে সবাই নাকাল
বিষে
ভরে যাচ্ছে ক্রমে শ্বাসের দমে ।
গল্পগাথার
ছুট ছবিতে ভুলভুলাইয়া
আঁকড়ে
ধরে যেকোনো এক দলের নিশান,
আপনি
যদি হন চোরের মাসতুতো ভাই
আমরাও
ফেলবো কেটে দুইখানি কান ।
অনুক্তা ঘোষাল
টুকরো চোখে
কথার উপর জমেছে প্রলেপ ধূলোর।
শুকনোপাঁজরধুয়ে ছন্নছাড়া জল,
সাদাকালো প্রেমের কথা মুছে,
চেতনার হাতছানি,অন্য কোথাও চল।।
আজ বুঝি মেঘ দেখেছিস নতুন,
তাসের ঘরে বাঁধবি কি সংসার??
কৃষ্ণ চূড়ার রং নিয়ে কড়াকাড়ি
নতুন গড়ার ঢেউ ওঠে দুর্বার ।
নতুন কাব্য ফের লিখে তুই কবি,
আবার টেনে আনলি কালের ঝড়,
হাতের রেখায় জল থই থই নদী
টুকরো চোখে বাঁধিস সোনার ঘর।
মনিরুদ্দিন খান
এই
পোড়া ফসলের মাঠ
চারিধারে
পুড়ছে ফসলের ক্ষেত
ভীত
পাখিরা উড়ে যাচ্ছে
বারুদগন্ধী মাঠের ভিতর
শিশুপাঠের
দৈত্যেরা তেপান্তর পেরিয়ে এসেছে আবার
উঠোনের
সবুজ ঘাস মাড়িয়ে যাচ্ছে অবমানব পায়ের পাতা
নিকষ
হাত বাড়িয়ে দিয়েছে একটুকরো
সন্ত্রস্ত কলিজার দিকে
এই
হাত চেনে ইরাকের শিশু, সিরিয়ার নারী
মায়ানমারের
অসহায় পিতা-মাতা
আর বিশ্বের যত নিপীড়িত মানুষের দল
এই
হাত মান নেয়
প্রাণ
নেয়
কেড়ে
নেয় রাত্রির ঘুমের নির্যাস
নারীর
শরীর থেকে খুলে নেয়
সম্ভ্রমের বাস
এই
পোড়া প্রান্তর আমাদের নয়
আমাদের
ছিল না কখনও
অথচ
এখানেই আজ পেতেছি বিছানা এত ভালবাসাহীন
এই পোড়া ফসলের ক্ষেতে
ঘৃণা আর বিষময় কেটে যাচ্ছে আমাদের দূ:সহ
রাত।
দুটি কবিতা - বিশ্বজিৎ
ছায়া
বড়ো বড়ো অন্ধকার নিয়ে
ঢেউ আলো দেখাচ্ছে।
আছাড় মারছে যত্র-তত্র
ভুলে যাওয়া অথবা
না যাওয়ার মুহুর্ত,
আরও উজ্জ্বল।
তবুও একটা ছায়া আছে
যার হাত ধরে পৃথিবী কতটা স্বচ্ছ…
পছন্দ
চারিদিকে আক্রমণ।
ঈশ্বরও কিছুটা
তোমার উপর অসহায়…
শূন্য ফেটে,
শূন্য আরও বড়ো হয়ে যাচ্ছে…
ভয়ংকর সব ভালোবাসা ধুয়ে
রান্না হচ্ছে পুরনো তরকারি।
হোম নয়।মন্ত্র নয়
চোখ বুজলে,
সম্পর্ক কতটা শিথিল হয়ে আসছে
বড়ো বড়ো অন্ধকার নিয়ে
ঢেউ আলো দেখাচ্ছে।
আছাড় মারছে যত্র-তত্র
ভুলে যাওয়া অথবা
না যাওয়ার মুহুর্ত,
আরও উজ্জ্বল।
তবুও একটা ছায়া আছে
যার হাত ধরে পৃথিবী কতটা স্বচ্ছ…
পছন্দ
চারিদিকে আক্রমণ।
ঈশ্বরও কিছুটা
তোমার উপর অসহায়…
শূন্য ফেটে,
শূন্য আরও বড়ো হয়ে যাচ্ছে…
ভয়ংকর সব ভালোবাসা ধুয়ে
রান্না হচ্ছে পুরনো তরকারি।
হোম নয়।মন্ত্র নয়
চোখ বুজলে,
সম্পর্ক কতটা শিথিল হয়ে আসছে
রিপন হালদার
একটা দিন
এই যে গোটা একটা দিন খালি পড়ে আছে
কামরা, আমি কী করব
সকালে পা ছড়িয়ে সন্ধ্যায় মাথা ডোবাই
নাকি আমার শাঁসে ভরে ফেলব এই
চলমান ঘর
হাত পাগুলি খুলেও তো রাখতে পারি
অনাদি স্টেশন, খালি সিট
তিন-চার বার বসাও অপরাধ নয় তো, একার
কিছুটা ধারও দিতে পারি মাথা
হাওয়ার ছোবলে
একটা চাকা দলা পাকাচ্ছে পেটে
প্রস্রাব আর কতো দীর্ঘ ব্রীজ
পাঁচিল টপকে আকাশ পেরোতে চায়
একটা দিন, সূর্য পেঁচানো কাগজ
দলা পাকাচ্ছে পেটে
দীপ মাইতি
বিষাদের নেশা (চার)
জানলার বুক থেকে নেমে সরু চাঁদ রোজ লুকোয়
রাতের হাওয়ার ভিতর দাঁড়িয়ে থাকা শুকনো ঝাউবনে,
লুকানো সব ইচ্ছেরা শুধু নীরবে ঝরে যেতে থাকে
চৈত্রশেষের বিকেলের হলুদ পাতার মতো;
বৃষ্টিভেজা দুপুরের সবুজ স্বপ্নে দেখা চেনা চেনা হাসি
খুঁজতে গিয়ে আজ ক্লান্ত এ দু'চোখ শুধু
অনেক রাতের গোপন খাতায় একপশলা কবিতা আঁকে,
ফাল্গুন বিকেলের ডানায় অভিমানী রোদ্দুর মেখে ফিরে যায়
নাম না জানা একলা চিল,
মহম্মদ সামসুর রহমান
নষ্টালজিক
আপাদমস্তক নিজেকে ডুবিয়ে ফেলেছি অচেনা পাঁকে,
আমি ওঠার চেষ্টা করছি,ব্যর্থ হচ্ছি,ডুবে যাচ্ছি
আমার আয়ু ফুরিয়ে যাচ্ছে প্রমাদ গুণতে গুণতে,
প্রেম অপ্রেম হতে যতটা সময় লাগে
ততটা সময় ধরে চেষ্টা করছি পুনর্বার বাঁচবার,
স্মৃতির অতলে কেবলই কুরে কুরে খায় বিষঘুম,
এগিয়ে এসো প্রিয় শহর পেরিয়ে গঙ্গার ধারে—সেই বকুল গাছ,
বকুল গাছে আটকে থাকা আমার কলেজ জীবন___
আমার ঋতু তিথি নক্ষত্র___ওটাই তো আমার কবিতার পীঠস্থান,
তুমি কষ্ট দিয়েছিলে,কষ্ট পেয়ে একদিন ভেবেছিলাম তোমার পৃথিবীতে ঢুকে
তছনছ করে দেবো___সব অলীক সুখ,খোলাখুলি হাসি,চোরা কারবার,
কিছুই করতে পারিনি,কিইবা করতে পারি!
জেনে গেছি আমার পুনর্জন্ম বলে কিছু নেই
ঋতুর বদল ঘটে,বকুল গাছের পাতা ঝরে,
রোগা পাতলা পাগল মানুষটা বকুল গাছের নীচে বসে,সিগারেট ধরায়,গাঁজা টানে,
অধ্যাপক বকে,গেটম্যান গলা ধাক্কা দিয়ে বের করে দেয়___লোকটা নিজেও কবি,
যে কিনা বকুল গাছ না থাকলেও এক সেকেন্ডে কয়েক হাজার বকুল গাছ
তৈরি করে তার তলায় প্রিয় ফুলের চারা পুঁতে দেয়,
আগলে রাখে সারাদিন,সারারাত__
ঘাম অশ্রু দিয়ে বড়ো করে চারা দানা_সামান্য জীবন,
অথচ একটা সামান্য জীবনের কাছে লোকটার দেহ প্রেম বিলীন হয়ে যায়_হারিয়ে যায় অস্তিত্ব
লোকটা অনায়াসে হারিয়ে ফেলে নিজের রৌদ্রের উত্তরাধিকার,
ভালোবাসে স্বমেহন,ভালোবাসে নিজেকে,
যতটা প্রেম চায় আমিই কি দিতে পারি!
দড়ির মতো যেন গুটিয়ে ফেলেছি নিজেকে
কেউ যদি ইশারায় অদ্ভুত ভঙ্গিতে ডাকে
আমি তেষ্টায় জল চাইবো,
বারবার পরাজয় স্বীকার করতে কে চায়?
মৃত্যুকে বাঁ পাজরে বসিয়ে ডানপাশে জীবনকে ভালোবাসতে গিয়েও একরাশ বিড়ম্বনা,
আমার পৃথিবীতে আমি একাই পুরুষ
হে প্রেম হে নারী হে স্বৈরিণী হে প্রিয় ফুল
ডুবে যাও সূর্য অস্তাচলে___
মিশে থাকো বালি সিমেন্টের মতো কবিতায়,
দেবী হও,প্রণাম নাও,প্রেম চেয়ো না__
এতে সদস্যতা:
পোস্টগুলি (Atom)