০৩ আগস্ট ২০১৪

মোহছেনা পারভীন

আমার গ্রামের গল্প


আমার গ্রামের গল্প শুনবে
এমন আছো কেউ?
বুকে বইছে দুখের  নদী
চোখে নদীর ঢেউ
পুকুর ভরা মাছ ছিল
রুই কাতলা কৈ
মাঠ ভরা ধান ছিল
ঝুড়ি ভরা খই

মধুমাসে ফলের গন্ধে
উতাল হতো মন
আমার গ্রামের ফলগুলো সব
সাত রাজারই ধন
নদীর ধারে বসে যখন
চুপটি করে রই
দোলনায় দোল দিতো এসে
আমার প্রাণের সই

গোল্লাছুট কানামাছি
নিত্যদিনের খেলা
খেলতে খেলতে কখন  যে
গড়িয়ে যেতো বেলা। 

মায়ের বকা খেতে খেতে
চোখে আসতো ঘুম
আব্বু এসে চুপটি করে
গালে দিতো চুম
গল্প গুজব দুষ্টুমিতে
করেছি সময় পার
নিশ্চিন্তে তাল পুকুরে
কেটেছি সাঁতার
কোথায় সেই পুকুর
আজ কোথায় প্রাণের  সই
এই শহরে বদ্ধ ঘরে
একলা জেগে রই
গল্পটাতো সত্যি  বলছি
একটুও নেই খাদ
গ্রামগুলো শহর এখন

বিষণ্নতার ফাঁদ । 




সৈকত ঘোষ

বিতর্কিত পঙ্গপাল 


 সিরিয়ার শিশু মৃত্যুর দায়ভার আপনি 
এড়াতে পারেন না 
বিতর্কিত পঙ্গপাল বলে সংবাদপত্রে 
আপনি যে লেখাটি লিখেছেন 
সেখানে কোথাও পথের উল্লেখ নেই 

মানুষ কি পঙ্গপাল হোতে পারে!

টিভিতে মাঝে মাঝে আপনাকে দেখি 
খুব সুন্দর গুছিয়ে কথা বলেন আপনি 
আপনার মতে 
কলেজগার্ল কলগার্ল এর পার্থক্য:উভয়েই 
যে কোনো সময়ে মৌমাছি থেকে 
মধুতে রূপন্তরিত হোতে পারে 
পোস্টমর্টন: টেস্ট টিউবে অন্তর্বাস যাচাই 
 করার মতন 
জাতীয় বিপর্যয়: কোনো সঠিক সঙ্গা আপনি দেননি 
তবে
আর একটা উত্তরাখন্ড আমরা দেখতে চাই না 
শিরোনামে দেখতে চাই না আর একটা কামদুনি
সীমান্তে পাঁচ জন জওয়ান মরলেও 
আপনার চায়ের কাপে একদানা চিনিও 
কম পরে না | লাঞ্চ ব্রেকে যখন আপনার প্রিয় 
রেশমি কাবাবে তৃপ্তির কামড় লাগান তখন কি মনে হয় ?

শরীর নিরাকার ঈশ্বর হোলে
জংলী ফুলের গন্ধেও করে ইচ্ছেরা 
তাদেরই বা দশ কী...
আপনারাও তো ব্রেকফাস্ট টেবিলে  সুখী দাম্পত্ত্য
রাতে পারভাটেড!

আর একটা দিল্লী হোলে দামিনীরা
মোমবাতি মিছিলেই শেষ হয়ে যায় 

আপনি না সমাজতাত্ত্বিক, আপনি না বুদ্ধিজীবি
সুতরাং তার দায়ভার আপনার ওপরেও বর্তায় 
আমি বলি কি স্যার
                       পথ একমাত্র পথ 
                       সোজা বা উল্টো  




সায়ক চক্রবর্তী

বুনোফুল 

এরপর আর সে ফেরেনি। 
দুদিন অপেক্ষা  চোখে বসে ছিল পাড়া
অভাব তো কিছু ছিল  না,
তবে সেকি মরে টরে  গেল!
নাকি পাগল হয়েছে  সম্প্রতি!
ফিরল না পিওন, শুধু ফিসফাস শোনা গেল
পাড়াজুড়ে মরে  গেল সেও...

বহুদিন পর শোনা গেল 

নদীর চরায় বসে  কবিতা লিখছে নাকি সে। 




মামনি দত্ত


মানসী



বিষাদ অন্তিমে রেখেছি শ্বাশত ফুলের মতো সময়
নির্জীব স্নায়ু হারিয়েছে যে কোণ,
এসো .. বিষাদ অন্তিমে রেখেছি শ্বাশত ফুলের মতো সময়
নির্জীব স্নায়ু হারিয়েছে যে কোণ,
এসো ..সেই খানে তোমার কলম ছোঁয়াও কবি,
অতি সন্তর্পনে আজ আমি জেগে উঠি
রচনারীতি প্রানরুপ মরু কান্তার পাড় হয়ে
ক্রম অগ্রসরমান আমার অনু পরমাণু অসম্ভবতায়-
শ্বেতপদ্ম চাঁদ কোমল সুরে নেমে এলে
তুমি আঙুল রেখো সুগন্ধি গোলাপ ঠোঁটে
তিরতির করে বয়ে যাওয়া নিয়তির বিনম্র ঘোষণা,
তারা খসা মুহুর্তে পা রাখো পেখম বৃত্তের অন্দরমহলে -
সসাগরা পৃথিবী অলক্ষ্যে কৃষ্ণ সম নীল
ভাসিয়ে রাখে পুষ্পভার নাভিমূলের চারপাশে
আর তোমার কলম থেকে কোলাজ সন্ধ্যায়
অগুনতি কবিতা থরেবিথরে পড়ে থাকে,
তুমি রোদ্রছায়াতরু পাড় হয়ে অসীমত্ব ধারণ করো,
বস্তুত কোন একদিন ভালবাসার তীব্রতায় রেনু রেনু হয়ে ঝরে
পড়ার সাথে তোমাতেই ফিরবো
আড়ফেরতা পায়ের ছাপ বুকে ধরে 
 সেই খানে তোমার কলম ছোঁয়াও কবি,
অতি সন্তর্পনে আজ আমি জেগে উঠি
রচনারীতি প্রানরুপ মরু কান্তার পাড় হয়ে
ক্রম অগ্রসরমান আমার অনু পরমাণু অসম্ভবতায়-
শ্বেতপদ্ম চাঁদ কোমল সুরে নেমে এলে
তুমি আঙুল রেখো সুগন্ধি গোলাপ ঠোঁটে
তিরতির করে বয়ে যাওয়া নিয়তির বিনম্র ঘোষণা,
তারা খসা মুহুর্তে পা রাখো পেখম বৃত্তের অন্দরমহলে -
সসাগরা পৃথিবী অলক্ষ্যে কৃষ্ণ সম নীল
ভাসিয়ে রাখে পুষ্পভার নাভিমূলের চারপাশে
আর তোমার কলম থেকে কোলাজ সন্ধ্যায়
অগুনতি কবিতা থরেবিথরে পড়ে থাকে,
তুমি রোদ্রছায়াতরু পাড় হয়ে অসীমত্ব ধারণ করো,

বস্তুত কোন একদিন ভালবাসার তীব্রতায় রেনু রেনু হয়ে ঝরে
পড়ার সাথে তোমাতেই ফিরবো
আড়ফেরতা পায়ের ছাপ বুকে ধরে । 








সতীশ বিশ্বাস

ভাঙা ডালপালা 

যখন বুকের মধ্যে কষ্ট শব্দহীন
তখন একটু যদি রুক্ষস্বরে কথা বল তুমি
লতার অগ্রভাগ নুয়ে পড়ে দুঃসহ ভারে
মনে হয়-- তলহীন বালিশে তলিয়ে যাচ্ছে মাথা
মনে হয়-- তীক্ষ্ণ খাড়া পাথরের ওই যে দেয়াল
মুখে তার ভাষা নেই--শ্রবণশক্তি নেই-- শুধুই আগুন...
তবুও কুড়িয়ে নিই কাঙাল আঙুলে ডালপালা
তবুও গুছিয়ে বাঁধি কাঁপাকাঁপা স্বপ্নদেখা হাতে
তবুও আঁকড়ে ধরি ভঙ্গুর সুতোর শরীর
নাক উঁচু রেখে ভাবি-- মানুষের দোষ নেই কোন
সংসারে মানুষেরা--  মানুষেরই মতো ।