১২ ডিসেম্বর ২০১৫

কবিরুল ইসলাম কঙ্ক

রোজ যাই 

রোজ যাই    ইসকুল       রোজ যাই 
তবু কেন     করো এত     হইচই, 
মাঝে মাঝে   পেটে ব্যথা    হতে পারে 
কেন এত     বাড়ি জুড়ে     রই রই। 

ইসকুলে      শুধু লেখা    শুধু পড়া 
মাঝে মাঝে   দিদিদের    বকুনি, 
চিৎকার     মারামারি    হতে পারে 
সবেতেই     তোমাদের    ট্যাটানি। 

প্রতিদিন       এক ঘেঁয়ে      ইসকুল 
মাঝে মাঝে     মন চায়      উড়তে, 
সীমানার        সব বাধা    পেরিয়ে 
পরিদের        দেশে গিয়ে    ঘুরতে। 

রোজ যাই    ইসকুল     রোজ যাই 
যাবই তো    ইসকুল     বলছি, 
সব পড়া      করে দেব   এই নাও 
এক সাথে     সব বই      খুলছি। 




গার্গী মুখার্জী

খেলার মাঠে 

যখন আমি খেলা করি 
মা বলেন, 'খোকা, 
পড়ার সময় খেলা করো 
তুমি ভীষণ বোকা ।' 

বাংলা অংক শক্ত বড়ো 
ইংরাজি নয় সোজা, 
কম্পিউটার আছে সাথে 
আছে ড্রয়িংয়ের বোঝা। 

এত কিছুর পরে যখন   
একটু করি খেলা, 
তোমার বকাবকির ঠেলায় 
কান যে ঝালাপালা । 

পড়ার সাথে তাল মিলিয়ে 
খেলাও দরকার, 
খেলায় হয় শরীর সতেজ 
বজ্রকঠিন হাড়। 

বছর শেষে খেলার মাঠে 
দিতে গিয়ে রান, 
সবার শেষে ছুটবো তখন 
প্রাণ হবে আনচান। 

লংজাম্প আর হাইজাম্পে 
জিততে যদি চাই, 
খেলার সঠিক অভ্যেসটাই 
সহজ সে উপায়। 

পড়া আর খেলা মিলে 
তবেই পূর্ণ  শিক্ষা, 
পড়ার সাথে খেলার মাঠে 
নেব নতুন দীক্ষা। 

অভ্যাসেই বাড়বে সাহস 
দূরে যাবে ভয়, 
পড়ার সাথে খেলার মাঠেও 
হবেই হবে জয়। 







ইন্দিরা দাস

খেলা আর খেলা 

লাল নীল সবুজের 
মেলা বসেছে, 
কচিকাঁচা শিশুরা 
খেলতে নেমেছে। 

একশো মিটার  দৌড় হোক 
দুশো মিটার দৌড়, 
খেলাই তাদের এনে দেবে 
নতুন জীবনের মোড়। 

কেউ দিচ্ছে হাইজাম্প 
কেউ দিচ্ছে লং, 
যাই করুক সবার মনে 
লেগেছে খুশির রঙ। 

কেউ ভাঙছে মাঠে হাঁড়ি 
কেউ জিমন্যাস্টিক, 
সবকিছু চলছে দেখো, 
ঠিক  সিস্টেমেটিক। 

খেলার শেষে আছে প্রাইজ 
মুখে আনন্দধারা, 
খেলার মূলমন্ত্র হলো 
শরীর গঠন  করা। 




মনিরুদ্দিন খান

শূন্যের কবিতা 

ইদানিং আমার কবিতা নিয়ে তোমার বড্ড অভিযোগ, 
এলোমেলো কথা, অস্পষ্ট,  অস্পূর্ণ ছবি--- 
এসবের মাথামুণ্ডু তুমি নাকি কিছুই বোঝোনা।  
তুমিতো টিভিতে সিরিয়াল দেখ রোজ সন্ধ্যায় 
মৌজ ক'রে, চা আর ভাজা কিছু সাথে; 
আমার ভিতরে তখন রক্তবমি হয়, রক্ত ঝরে 
মাথার ভিতরে, পর্দায় কামদুনি, সিরিয়ার হানাদার, 
বিদর্ভের মৃত চাষী, শার্টের ছেঁড়া বোতাম, 
তোমার ব্রেসিয়ারের হুকে ঝুলে থাকে অপুংযোনি শূন্যের কবিতা, 
তুমি আমার অস্থিরতা বোঝো, তবু পাশ ফিরে শুয়ে পড়ো। 



 



সৌরভ হোসেন

জীবন স্লেটের অক্ষর 

জীবনের স্লেটে কটা অক্ষরই বা আঁকতে পারলাম 
সবই তো ঝরে গেল শুকনো পাতার ইতিহাস 
একটা অক্ষরও কি কখনও অপরাহ্ণের চুম্বন হতে পেরেছে ! 
সাদা পাতার নিশ্বাস আর কখনই হয়তো ডিঙোবে না ..... থিতানো নদী 
জীবনের সলতেটাকে আরও এক বিকেল পাকিয়ে যাই 
অন্ধকারের সব অক্ষর চিনে নিক শব্দের প্রেম 
জীবন -স্লেটের শেষ অক্ষরটা কিন্তু তোমার জন্যই আঁকবো। 



দীননাথ মণ্ডল

ফুটপাতে ওরা 

কেউ বলে ওরা বিদেশী কেউ বলে আদিবাসী 
তাই ওরা ফুটপাতে 
দয়া হলে দু'চারানা দেয় কেউ বা কখনও হাতে । 
মাথার উপর নীল চাঁদোয়া মুড়া বিশাল ছাদ 
দিনে সূর্য রাতে আলো দেয় চাঁদ । 
উচ্ছিষ্টের আঙিনায় জীবন খুঁজে দিনরাত 
কুকুরের সাথে মিলেমিশে চাটে সভ্যতার পাত । 
জীবন দুয়ারে দাঁড়িয়ে কেউ বলতে পারে না ওরা কী জাত 
নাকে রুমাল চেপে রাস্তা পেরোয় সভ্যতায় বাজীমাত । 
নগ্ন দেহে কয়লা পুড়া 
মানবের পান্ডুলিপি ওরা । 



কামরুন নেছা কুমু

গল্প নাই  

হেথায় কোনো গল্প নাই 
গল্পে কোনো পরী নাই 
পরীর বাড়ী বহুদূর  
রামগর থেকে মধুপুর  
মধুপুরের গাড়ি নাই 
নৌকা ছাড়া গতি নাই 
নৌকায় কোনো মাঝি নাই 
নিজের হাতে বৈঠা বাই  
গান ধরেছি খেয়ালে  
বৈঠা নিলো বোয়ালে !