০৫ জুলাই ২০১৬

কবিরুল ইসলাম কঙ্ক

অন্তর্জাল

চোখ জুড়ে প্রযুক্তির ব্যাকরণ অধ্যায়
নিয়ন রোশনি জমকে শরীরী পাঠ,
বিভঙ্গ মুদ্রায় আঁকা হৃদয় জ্বলে যায়
ক্রমশ জমে দেখনদারি খেলার মাঠ ।

হৃদি ভেদক আহামরি ইলেকট্রন কণা
আছে বেশ খুশ গভীর প্রবাল প্রেমে,
ছুঁয়ে আছে দিব্য হরফ, ছবি আনমনা
যেন বাতাসি ঠোঁট-রং অন্তর্জাল ফ্রেমে ।

কোথায় ফেলবে পা । সবখানেতেই জাল
হৃদয় খুলে হয়নি দেখানো মনের গোপন হাল । 



চিরঞ্জিৎ সরকার

যাপন

প্রথমেই খুলে নেওয়া হোক পোশাক থেকে
আমাকেই....
পোশাকে সাজাও ধন,দাও শিল্পবোধ নিজের
আমাকে দেখে লাগুক আদম,বিয়োগে যাক
সভ্যতার প্রিয় দর্শন।
প্রভু ব্যর্থ হতে পারে জেনে হেসে পুনরায়
ছুঁয়ে দ্যাখে আমাকে;শক্তপোক্ত একটা গাছে
সম্পর্ক বেঁধে দেন।অমর হই।



দেবাশিস সাহা

নামহীন

অনবরত রাস্তা পার হচ্ছে মৃত্যু

তুমি সাজিয়ে রাখছো অপেক্ষা

পরের স্টেশনে বসন্ত

আদরের ধারাপাত ডিঙিয়ে
হেঁটে আসছে সেই অনাহুত বাস্তব

আনমনে বেজে যাচ্ছে জীবনের রিংটোন

তুমি শুনছো ?





রাজেশ চট্টোপাধ্যায়

গুচ্ছ কবিতা


বোতাম খুলে রেখ না
ছায়া ঢুকে যাবে...
আলোর অভাবে
আর বোতাম লাগাতে পারবে না।


নতুন জুতো কিনে যে বৃদ্ধ
খালি পায়ে হেঁটেই ঘরে ফেরে
সে প্রকৃত মাটির মানুষ


ব্যথার অপর নাম চিঠি
ভর নেই
তবু অনেকটা ভারী,
খামের নিখোঁজ তাকে ব্যথিতা করে।




কৌশক গাঙ্গুলি

দুটি কবিতা

 ক.
দলতন্ত্রের দীর্ঘমেয়াদী
জীবনে খালি রঙ বদলায় । প্রতিবাদ এখন আমবাতের মতন চুলকায় , ক্ষমতায় যেই থাকে , সেই রাবণ হয়ে যায় ! উন্নয়ণ ঢপে হোঁচট খায়  যাত্রাদলের বিবেক মাষ্টার.... গাঁজা ,মদ না । দাঙ্গা বা রেপ নয় , অরাজক মাতৃভূমি না , শুধু গণতন্ত্রের আর কথা বলার স্বাধীনতা চাই ।

খ.
সক্রেটিস বলেছিলেন তিনি  জানেন ; তিনি কিছুই জানেন না আর এদিকে চায়ের দোকান বেঞ্চিতে আলোকিত করে বসা সবজান্তা পবিত্র পাপীরা । রাস্তায় কুকুর ,কাক ও আবর্জনা বাড়ছে আর এদিকে কাজের বদলে অকাজ , শান্তির বদলে সন্ত্রাস , উন্নয়ণের বদলে করের টাকায় খয়রাতি বাড়ছে , আমাদের বেগুন ভবিষ্যতে শুধুই অন্ধকার .....





গার্গী মুখার্জী

বৃষ্টি ভেজা

বৃষ্টি ভেজা আর্দ্র দিনের সকালবেলা
বুকেরমাঝে অঝোর ধারা করছে খেলা।  
বুকফাটা মাঠ শুকনো পাতা ভিজে
প্রাণ পেয়ে সে নাচছে নিজে নিজে।
নাচের তালে মাতিয়ে আপন পর 
ভাঙা বুকে কেউ গড়ে নতুন ঘর।
জলখেলা নদীর বুকে প্রাণের দোলা
বাউল ভোলায় ভুবন হয় আত্মভোলা।
বৃষ্টি সুখে মন ভিজে যায় বৃষ্টিবেলা 
প্রাণে লাগে প্রাণের পরশ বৃষ্টি খেলা। 




দেবাশিস বিশ্বাস (মুরারি)

শ্যামলী পাখির মতো

আকাশের তলে শ্যামলীর চোখে মুখে উচ্ছ্বাস,
ট্যাক্সি চেপে স্বপ্নের শ্বশুর বাড়ি ;
চারদিকে কুটুম্বের দল যেন বাধ ভাঙা নদী;
অদূরে সাগরের চোখে সাগর নেমেছে ;
জোড়াহীন একটি শালিখ সাগরের দিকে আড়চোখে চায়,
একটি ফড়িং নাকের ডগায় ঠোকা মারে ;
পুকুর জলের ডুমুর তলে একটি মোটা ধোড়াসাপ আড়মোড়া দেয় ;
সাগর অপলক !
হঠাৎ একটা চড়ুই-এর ফুড়ুৎ পাখার বাড়ি সাগরের মাথায়,
সম্বিত্-এ সাগর দেখে ব্যাংক্ অফিসারের হাতে শ্যামলীর হাত,
ট্যাক্সির গতি আশি ;
সাগর প্রশ্ন করে না ;
কেননা আকাশটা তার ছাদ
থামটা সে নিজে,
বসুন্ধরা ঘরের মেঝে;
শ্যামলী পাখির মতো ।