বিফলে গেল
নক্ষত্র বিহীন একোন লগনে
আমার দুচোখ বাঁধা ধর্মের ষাঁড়ের মত;
আমি যতই হাটি হুমড়ি খেয়ে পড়ি আর পথ হাতড়াই
কোন পথে অমৃত আছে ।
পদধ্বনি শুনলেই বহুদিনের যতনে গাঁথা মালাখানি ছেড়া ঝোলা থেকে দুহাতে উচিয়ে বলি
তুমিতো সত্যবাদি , মালাখানি গলায় পরে আমাকে অমৃতের পথখানা দেখিয়ে দাও ;
নিঃশেব্দে চলে যায় পথিক;
এমনি করে একশো কুড়ি কোটি হয়ে গেছে আমার ---
মালাখানি আজও যতনে ঝোলার মাঝে ।
অসময়
দাঙ্গা আর যুদ্ধ নিয়ে তুমি আমি সে
সবাই বেঁচে মরে আছি;
তোমার আমার নিশ্বাস ফেলার জাগায়,
অন্ধকার গোরস্থান।
পথে হারিয়ে পথ খুঁজে সমুদ্র তীরে গিয়েও তুমি পথ পাবেনা;
নিকষ কালো অন্ধকার।
অন্ধকার আর অন্ধকার,
অতীত বর্তমান ভবিষ্যত্
সব অন্ধকারের দিকে পায় পায় এগিয়ে যাচ্ছে;
অসময়ের এই অন্ধকার কেটে সুসময় আশার প্রতীক্ষায়
তুমি আমি সে কতটা অন্ধকারে ?
জেগে ওঠো
ভিজে করুণ শঙ্খের মত মুখের--- তিলফুলি নাসিকায়,
আমি প্রেমিক।
আমি প্রেমিক, তোমার উন্নত ঘটোধ্নিতে শিশুর আত্মার আধো আধো মা ডাকে;
প্রেমিক তোমার ভ্রমর-কালো বাঁকা
নয়নের অগ্নি প্রতীকে,
যার নিথর দৃষ্টিতে খাক হয়ে যাবে
পাপের সাজানো হিমালয়;
প্রেমিক তোমার বিধুসম অবযবের ওষ্ট অধরে প্রকৃতির আত্মভোলা রাখাল বেশে;
যে বেশে হয় কংশ নিধন।
আমি প্রেমিক,
তোমার রেশমি কালো চুলের দখিনা বাতাসে,জঞ্জাল উড়ানোর তান্ডব নৃত্যে;
প্রেমিক আমি ,
তোমার ঐ মৃনালসম বাহুভূজে, স্বর্ণলতার মত কণ্টকিত বৃক্ষ জড়িয়ে, হেমগিরি নীলগিরির মিলন রুপে;
আমি প্রেমিক তোমার সুডোল বরারহা পিনোস্তিনির ভারধরা বসুন্ধরায়-----
প্রেমিক তোমার রম্ভা উরুর সাবলীল গঠন বেদিতে যেখানে শত্রুর বুলেট প্রবেশ অসাধ্য;
প্রেমিক তোমার কমলসম রাতুল চরণে দাসখত্ লিখে;
'জননী জন্মভূমি স্বর্গাদপি গরিয়সি' রুপে;
আমি প্রেমিক,কামুক নয়;
তোমার লাঞ্চনায় শক্ত শাবল আমার মুঠিবদ্ধ;
তাই বরাভয় নয়,নির্ভয়ে জেগে ওঠ নারী,হুংকার দাও খোলা তরোয়াল হাতে;
অশুরের মুণ্ডু গলায় পরার পাশাপাশি----
কোমল পেলবতার পরশে কালের রশি টেনে ধরো;
আমি প্রেমিক মনে তোলার কোলে মাথা রাখি।
জলসাঘরে
জীবনের জলসা ঘরে কত গান
কত নৃত্যের তাল
কত ছন্দ কবিতার,
সমতলে ঝর্নার মত বয়েছিল একদিন এই মনে;
আজ যেদিকে তাকায় সব শূন্য
সব ফাঁকা মনে হয়,
যাদের আদর আমার আশিস হয়ে বৃষ্টি হত;
তারা একে একে স্মৃতির পাপিয়া ঝাপসা করে পঞ্চভুতে মিশে গেছে;
ফাগুন আসে শিমুলে রং দিয়ে,
পারিজাত প্রকৃতির খোঁপায় টকটকে হয়ে আমার স্মৃতির দরজা খুলে দেয়;
বহু দূরের দিকচক্রবালে আমার অন্বেষি চোখ শুধুই কাদের যেন খুঁজে ফেরে,
খুঁজতে খুঁজতে একসময় ক্লান্ত চোখে
বর্ষা নামে,
ফাগুনের আবির রাঙানো সুরেলা জলসার হারানো সুর গরম জলের বন্যায় নয়ন পাতে ঝরে পড়ে;
এক সময় চোখের ঝর্ণা থেমে যায়
মুখপানে চেয়ে দেখি জীবনের জলসা ঘরে একরাশ স্মৃতিভারে নুয়ে পড়ে আছি;
কেউ নেই কিছু নেই,
সূর্য নেভা রাত ;
মুখ পানে চেয়ে আছে ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন