০২ অক্টোবর ২০১৭

মুক্তগদ্য - মন্দিরা ঘোষ

খুঁজতে খুঁজতে

আজ আকাশের চেহারাটা খানিকটা ক্যানভাসে অস্থির তুলির আচরণের মত।সমস্ত টুকু ছেড়ে  বেড়িয়ে যাবার অন্তহীন প্রয়াস।আমিও  স্মৃতির শীতল মোড়ক খুুুলে বেরনোর তাগিদে অনেকদিন  পরে তোমার বাড়ির সামনে আজ।
দৃষ্টিপথের ছায়ায় পুরোনো জলছবি;
বারান্দায় মেহগনি কাঠের চেয়ারের চেয়ে থাকায় দাবাঘরের একাগ্রতা।
সাদা কালো ঘর গুলোয়  আজ বর্ষাঋতুর লুকোচুরি।

একসময় জ্যোৎস্নারঙা বাড়ির ভেতর ভালবাসার মানুষদের চলাচল কথাবার্তা দুবেলা ছুঁয়ে থাকত আমার চলার পথ।
তোমার শোবার ঘরে চুপি চুপি কথা ফেলে আসার ডাকপিয়ন সেজেছি।
আলপিনে গেঁথে ঝোলানো থাকত ছায়াকথার সারি পশ্চিমের হাওয়ায়; সারিবদ্ধ কথা গুলি হয়ত যত্নঘরে মেঘ হয়ে ভেসে আছে আজও!

আমার দুবেলা আসা যাওয়ায় জানলা থেকে তোমার দৃষ্টি পাতা থাকত।
আড়চোখ সঙ্গ দিত গলির মোর পেরিয়ে বিন্দু হয়ে যাওয়া সরলরেখা।
কোন বসন্ত দিন অথবা হরিয়ালি দুপুরের নির্জতায় তোমার আমার মাঝে সংক্রামী উপপাদ্যের ঝোড়ো  বাতাস বইত।

সেই সব ব্যতিক্রমী সময়ের ধারাপাত আমার দুহাতে; সেই পুরাণনামায় ধুনোর গন্ধ আছে, সন্ধ্যাপ্রদীপ  আছে,আছে প্রশস্ত বারান্দার কিছু গোপন আঁচড়।
বয়ে বেড়ানো স্মৃতিঝাঁপ নিয়ে আজ চৌকাঠে তোমার।
বুকের ভেতর ধূপ  জ্বালিয়ে  রেখেছি; আগুনের হাল্কা আঁচ টুকুতেই পুড়ে যাচ্ছে পূর্বজ পাপের পৃষ্ঠা গুলি।

তোমার আপ্যায়নের  মিষ্টতায় অর্গ্যানের চেনা সুর, আন্তরিকতার আঙ্গুলে ঝরে পড়ছে বসন্তবাহার।
অথচ কখন থেকে তোমার চোখের ভেতর লুকিয়ে রাখা মনখারাপ খুঁজতে খুঁজতে সন্ধ্যে নেমে এল।
পাশে কোথাও শাঁখ বেজে ওঠার শব্দ; তুলসীতলায় প্রদীপের আলো দোল খাচ্ছে, ধূপ পুড়তে পুড়তে ধোঁয়ার কুণ্ডলী হয়ে এক আকাশ। 



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন