০২ সেপ্টেম্বর ২০১৭

গুচ্ছ কবিতা - হৈমন্তী বন্দ্যোপাধ্যায়

স্থানীয় প্রেম

ঘোলা সানগ্লাস, হাতে নিকোটিন।
বন্ধুর বাস, অপেক্ষাধীন।
জোনাকি ডাকছে পায়ের তলায়
স্তব্ধতা ডাকে, কখন কি হয়!
জাহাজ ভেবে প্রেমিকের বুক।
আসলে কফিন, ঠান্ডা চুমুক।
বন্দর পেরিয়ে ছেড়ে যাওয়া ধোঁয়া
মুখেতে কুলুপ, পাশাপাশি শোওয়া।
আমাদের ঘুম পায় প্রতিটা রাতে।
বিছানার ঘরে, শ্যাওলা তাতে।
চোখের ফোঁটা, জলের দরে
ভিজছে শরীর নোনা শহরে।
কত কথকতা, কিবোর্ড জুড়ে
চাপা ফরিয়াদ, গানের সুরে।
ঢোঁক গিলে খায়, ক্লান্ত প্রানে
পৃথিবীর রাত নামে চেনা দোকানে।


প্রেমের ভরসাটুকু

আমার আবার দামালপনায় ভরসা নেই।
মুঠো আদর চোখের নালিশ বর্ষণেই।
কেমন করে বাঁচছে সবাই চারদিকে?
আমি বরং শুভেচ্ছা দিই হার্দিকেই।
পলাশ ফুল আর কৃষ্ণচূড়ার অন্ত্যমিল,
আবহাওয়ায় আর্দ্রতা আর জলদিঘী।
ছবি আঁকা চলছে মনের পূবপানে,
ব্যস্ততা আর অবসরের মাঝখানে।
কারা যেন পাঠাচ্ছে সব প্রশ্নদের
চাইছে নাকি অশান্ত হোক আকাশ ফের?
তারচে' বরং চোখে প্রেমের স্তর পড়ুক,
ঠোঁটপাখিটার আবদারে হোক সুর শুরু।


কবিতা সম্মেলন 

বাইপাস। হোর্ডিং। ল্যাম্পপোস্ট।
শহরের জ্যাম থেকে শপিং মলের ভিড়
এসবের ভেতর দিয়ে আমি কবিতা শুনতে পাচ্ছি।
বিষয়বস্তু যাইহোক।
ভাতের হাঁড়ি খালি, চাল বাড়ন্ত।
ছোটোবেলায় মা'র কাছে শুনেছিলাম
চাল কমে এলে বাড়ন্ত বলতে হয়।
সেই খালি হাঁড়ির ভিতরেও একরাশ কাঁচাপাকা চুল- মাইক- মাথা- মাইক- ফুলের তোড়া -চেয়ার -ভারী কন্ঠস্বরের কবিতা শুনতে পাচ্ছি।
রাতে বিছানায় শুয়ে যখন আমিত্ব খোয়াচ্ছি
স্বামীসোহাগী হওয়ার প্রয়াসে,
জানলার তার দিয়ে ঠিক তখনই যা শুনতে পাচ্ছি সেসব ঝিঁঝিঁর ডাক নয়, কবিতাই।
অন্তত কবিতার মতো।
আমি একটা কবিতা সম্মেলনের ভেতর দিয়ে যাচ্ছি।
দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে ল্যাম্পপোস্ট আপাতত ক্লান্ত, হোর্ডিং ঝুলছে, বাইপাস ফাঁকা!
এসব ছাড়াও আমি কবিতা শুনতে পাচ্ছি।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন